গজারিয়ায় ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২০
শেয়ার :
গজারিয়ায় ডাকাত আতঙ্কে নির্ঘুম রাত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একের পর এক ডাকাতি ও চুরির ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। জানমালের নিরাপত্তায় এখন রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। লাঠিসোটা, টর্চলাইট, বাঁশি হাতে নিয়ে প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত তারা দলবেধে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন।

সম্প্রতি বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে গত রোববার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অস্ত্রধারী ডাকাতদল পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও মালামাল লুট করে নেয়।

এর পরদিন সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামে ব্যবসায়ী আলম মিয়ার বাড়িতে আরেকটি ডাকাতি হয়। মুখোশধারী ১৫-২০ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে দম্পতিকে জিম্মি করে ৩ লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়।

আবার মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেনের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। চোরের দল ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়।

এমন ধারাবাহিক ঘটনার পর গ্রামজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের সুরক্ষায় গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় গ্রুপ তৈরি করে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাতে ২৫-৩০ জন লোক কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে লাঠিসোটা, বাঁশি ও টর্চলাইট নিয়ে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন। অপরিচিত কাউকে দেখলে তারা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন এবং সন্দেহজনক কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীদের ডাক দিচ্ছেন।

বড় রায়পাড়া গ্রামের ইপু প্রধান বলেন, ‘আমরা পাহারা শুরু করার পর থেকে আর অপরিচিত কেউ গ্রামে ঢুকতে পারে না। আগে মাদকসেবী ও অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা ছিল, এখন সেটা নেই।’

নয়াকান্দি গ্রামের নাসির উদ্দীন সিকদার বলেন, ‘ডাকাতরা শুধু সম্পদ নেয় না, মানুষকে কুপিয়ে জখমও করে। তাই আমরা রাত ১১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত পাহারা দিচ্ছি।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি০ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক কয়েকটি ডাকাতির পর পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে পাহারা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে।’

আমাদের সময়/আরআর