স্কলাস্টিকায় সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র অবলম্বনে নাটক ‘হীরক রাজার দেশে’

বিনোদন ডেস্ক
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:১৭
শেয়ার :
স্কলাস্টিকায় সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র অবলম্বনে নাটক ‘হীরক রাজার দেশে’
ছবি : সংগৃহীত।

স্কলাস্টিকা আর্ট, ড্রামা, মিউজিক ও ডান্স ক্লাবের যৌথ আয়োজনে এবার মঞ্চস্থ হচ্ছে সত্যজিৎ রায় এর বিখ্যাত চলচ্চিত্র অবলম্বনে তৈরি নাটক ‘হীরক রাজার দেশে’। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা এবং শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকাল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় এসটিএম হল, স্কলাস্টিকা সিনিয়র ক্যাম্পাস উত্তরা মঞ্চস্থ হবে।

নাটকটি পরিচালনা করেছেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, সহ-পরিচালনায় রয়েছেন শাহীন সাইদুর। এই প্রযোজনার মধ্য দিয়ে স্কলাস্টিকার এসটিএম হল উদযাপন করছে প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তি।

নাটকটি উৎসর্গ করা হয়েছে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মিসেস ইয়াসমিন মুরশেদের প্রতি, যার স্বপ্ন ও নিষ্ঠা আজকের স্কলাস্টিকার ভিত্তি স্থাপন করেছে।

মঞ্চ, সংগীত, পোশাক ও আলোকসজ্জার সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে এক অনন্য নাট্য অভিজ্ঞতা।

নাটকটির সংগীত পরিচালনা করেছেন গাজী মুন্নাফ, পলাশ নাথ লোচন, ইলিয়াস খান পোশাক ও সেট ডিজাইনে আছেন মাহজাবিন মাহবুব, কাজী নওরীন মিশা, আয়েশা সিদ্দিকা প্রমুখ।

প্রথম দিনের প্রদর্শনীতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রামা ও ফিল্ম ক্লাবের সদস্যরা। দ্বিতীয় দিনের প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন, বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান এবং আফজাল হোসেন।

স্কুলের অধ্যক্ষ মিস ফারাহ সাফিয়া আহমেদ এবং মিস সাবিনা মোস্তাফা (হেড অব অ্যাকাডেমিক) তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন।

স্কলাস্টিকা বিশ্বাস করে— শিল্প, সাহিত্য ও নাট্যচর্চা শিক্ষার্থীদের মানবিকতা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায়। এই প্রযোজনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দলগত কাজ, আত্মবিশ্বাস ও কল্পনাশক্তির এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা অগল্পে দেখা যাবে, গুপি গান গায় তাই তার নাম গুপি গাইন, আর বাঘা বাজনা বাজায় তাই তার নাম বাঘা বাইন। সে অনেক দিন আগের কথা, গুপি আর বাঘা তাদের গান আর বাজনা দিয়ে খুশি করেছিলো ভূতের রাজাকে। সন্তুষ্ট হয়ে ভূতের রাজা তাদের দিয়েছিলেন জাদুর জুতা, যা খুশি তা খাওয়ার সুযোগ আর পেয়েছিলেন এমন এক বর যার কোন তুলনা নাই। ভূতের রাজার সে অতুলনীয় বরে গুপি আর বাঘা গান গাইলে কারো নড়বার কোন উপায় নাই। ভূতের রাজার বর পেয়ে গুপি আর বাঘা গুণ্ডির দুটি রাজকন্যাকে বিয়ে করে জামাই আদরে দিন গুজার করছে।

নাটক শুরু এখান থেকেই। আয়েশ করে আলসেমিতে দশটা বছর পার করে দিয়ে গুপি - বাঘা কোথাও ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সময় শ্বশুরমশাই তাদেরকে হীরক রাজ্যের বর্ষপূর্তি উৎসবে যাওয়ার পরামর্শ দেন। দুই ভায়রা ভাই হীরক রাজ্যে যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন।

আর সব রাজ্যের মতো হীরক রাজ্যেও কৃষক আছে, মজুর আছে, শিক্ষক আছে, গায়ক আছে। আর আছে হীরার খনি। কিন্তু হীরক রাজ্যে সবচেয়ে আজব যা আছে তা হলো স্বয়ং হীরক রাজা । হীরক রাজা লোভী, ভন্ড, মূর্খ এবং সবচেয়ে বড় কথা স্বেচ্ছাচারী; এক কথায় একজন যথার্থ খারাপ শাসকের সব কিছুই তার মধ্যে আছে। আর রাজার চেলা হিসেবে আছে শিক্ষামন্ত্রী, বার্তামন্ত্রী, সভাকবি, বিদূষক, বৈজ্ঞানিকসহ আরো অনেকে। রাজার বৈজ্ঞানিক তার যন্ত্রর-মন্ত্রর ঘরে মগজ-ধোলাই যন্ত্র তৈরী করে। সেই যন্ত্রে অবাধ্য প্রজাদের রাজার পছন্দের বুলি শেখানো হয়। সে বুলি লেখে সভাকবি। রাজার আদেশে শিক্ষামন্ত্রী দেশ থেকে শিক্ষা বন্ধ করে দেয়। সব বই পত্র পুড়িয়ে ফেলা হয়। পাঠশালা বন্ধ করে দেয়া হয়। এইভাবে নির্বিচারে অনাচার চালিয়ে প্রজাদেরকে অবনত করে শাসন করে যাচ্ছিলেন হীরক রাজা।

কিন্তু বাধ সাধলো পাঠশালার পণ্ডিত উদয়ন। রাজার অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি সচেতন করলেন ছাত্রদের ও জনসাধারণকে। আর তিনি বন্ধু হিসেবে পেয়ে গেলেন গুপি-বাঘাকে। উদয়নের কাছেই তারা হীরক রাজার আসল পরিচয় জানতে পারে। তারপর গুপি গাইন আর বাঘা বাইনের সাহায্যে উদয়ন ও তার সহযোগীরা মিলে হীরক রাজাকে গদিচ্যুত করায় সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর যথাবিহিত দুষ্টের দমন, শিষ্টের লালন।

আমাদের সময়/কেইউ