নিউইয়র্কে ঐতিহাসিক জয় /
ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র মামদানি
নিউইয়র্ক সিটির ১১১তম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি। তিনি সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস রচনা করেছেন। তিনি নিউইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে দাপট দেখিয়েছেন।
৩৪ বছর বয়সী এই গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক ও কুইন্স থেকে নির্বাচিত রাজ্য পরিষদের সদস্য ৫০% -এর বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। কুয়োমো মাত্র ৪০% -এর কিছু বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন, আর রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে ৭% -এর সমান্য বেশি ভোট পেয়েছেন।
মামদানির ঐতিহাসিক জয় ঘিরে দেশজুড়ে ডেমোক্র্যাটদের উৎসব চলছে। এদিকে, ভার্জিনিয়ায় কংগ্রেসওম্যান অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার প্রথম নারী গভর্নর হয়েছেন, নিউ জার্সিতে মিকি শেরিল ট্রাম্প সমর্থিত গভর্নর প্রার্থীকে পরাজিত করেছেন।
ব্রুকলিনের ডাউনটাউন পারমাউন্টে মামদানির নির্বাচনী রাতে উপস্থিত জনতা জয় ঘোষণার পর উল্লসিত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। তারা একে অপরকে আলিঙ্গন করেন এবং আনন্দ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার পাশাপাশি মামদানি প্রথম দক্ষিণ এশীয় এবং একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র নির্বাচিত হলেন।
জোহরান মামদানি নানা দিক থেকে ঐতিহাসিক ও ব্যতিক্রমী একজন নেতা। ১৮৯২ সালের পর তিনি হলেন নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে তরুণ মেয়র। পাশাপাশি তিনিই হলেন শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া প্রথম ব্যক্তি, যিনি এই পদে আসীন হলেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
এই কারণেই সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করা মামদানির জন্য এক বড় অর্জন। তবে তার গুরুত্ব এখানেই শেষ নয়- তিনি এমন এক নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদের প্রতীক, যাদের উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের বামপন্থী শাখা প্রত্যাশা করে আসছিল।
তরুণ ও ক্যারিশম্যাটিক মামদানি সহজেই তরুণ প্রজন্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। তার পটভূমি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ক্রমবর্ধমান বৈচিত্র্যকেও প্রতিফলিত করে।
তিনি সবসময় রাজনৈতিক লড়াইয়ে সরাসরি যুক্ত থেকেছেন এবং খোলাখুলিভাবে বামপন্থী নীতিগুলোর পক্ষে কথা বলেছেন- যেমন বিনামূল্যে শিশু যত্ন, গণপরিবহন সম্প্রসারণ এবং বাজার ব্যবস্থায় সরকারের সক্রিয় ভূমিকা।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
মামদানি বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়েছেন সেই অর্থনৈতিক বিষয়গুলোয়, যা সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমজীবী ভোটারদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং যেগুলোতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ধীরে ধীরে মনোযোগ হারাচ্ছিল। তবে একই সঙ্গে তিনি দলের বামপন্থী সাংস্কৃতিক অবস্থান থেকেও সরে আসেননি।
মামদানির নির্বাচনী প্ল্যাটফর্মে ছিল- ভাড়া নিয়ন্ত্রিত ইউনিটের ভাড়া স্থগিত রাখা, আরও সাশ্রয়ী আবাসন নির্মাণ, ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ৩০ ডলারে বৃদ্ধি, বাস বিনামূল্যে করা, শহরের ধনী নাগরিকদের উপর কর বৃদ্ধি এবং আরও অনেক বিষয়।