বহিরাগত মামদানিই কি নিউইয়র্কের নেতা
নবাগত। এবং সমালোচকদের চোখে বংশসূত্রে ‘বহিরাগত’ও। জোহরান মামদানি তবু সব জরিপে এগিয়ে আছেন; কিন্তু আগামীকাল ভোটের লড়াইয়ে সত্যিকার অর্থেই তিনি কি জয় পাবেন? বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- নিউইয়র্কবাসী সম্ভবত এই নতুন মুখকেই তাঁদের মেয়র হিসেবে বেছে নিতে যাচ্ছেন।
মামদানি ডেমোক্র্যাটিক দলের মেয়র পদপ্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারে বের হলে সমর্থকরা তাঁকে থামিয়ে দেন। এ থেকে তাঁর জনপ্রিয়তার আঁচ পাওয়া যায়। মাত্র ৩৪ বছর বয়সী এই নেতা যদি মঙ্গলবার জয়লাভ করেন, তবে তিনি এক শতাব্দীর মধ্যে নিউইয়র্ক সিটির সর্বকনিষ্ঠ মেয়র এবং প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় নেতা হিসেবে ইতিহাস গড়তে চলেছেন।
কিছুদিন আগেও প্রায় অপরিচিত এই ব্যক্তি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো অবস্থানে চলে এসেছেন, যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ১১৬ বিলিয়ন ডলারের বাজেট এবং বিশ্বব্যাপী নজরদারি।
ভাইরাল ভিডিও ও পডকাস্টারদের মাধ্যমে মামদানি সেইসব হতাশ ভোটারদের কাছে পৌঁছেছেন, যখন ডেমোক্র্যাটিক দলের সদস্যদের মধ্যে দলের প্রতি বিশ্বাস সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তবে মামদানির মূল সমস্যা হলো- তাঁর উচ্চাভিলাষী প্রতিশ্রুতি পূরণের ক্ষমতা এবং কোনো নির্বাহী অভিজ্ঞতা ছাড়া একজন রাজনীতিবিদ কীভাবে বিদ্বেষী ট্রাম্প প্রশাসনের আক্রমণ সামলাবেন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
মামদানি নিজেকে একজন গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, বরং শ্রমিকদের হয়ে কথা বলতে চান। এই রাজনীতি বার্নি স্যান্ডার্স ও আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-করটেজের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এরই মধ্যে হুমকি দিয়েছেনÑ নিউইয়র্কবাসী যদি একজন ‘কমিউনিস্ট’ নেতাকে নির্বাচন করে, তবে তিনি ফেডারেল তহবিল প্রত্যাহার করে নেবেন।
মামদানির মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে তাঁর কাছে হেরে যাওয়া এবং স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস সিøউয়া তাঁদের দুই জনকেই উপহাস করেন।
মামদানির নির্বাচনী বার্তা জীবনযাত্রার ব্যয় এবং জীবনযাত্রার মানের ওপর নিবদ্ধ। তিনি সর্বজনীন শিশুযত্ন, বিনামূল্যে পাবলিক বাস সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাঁর এজেন্ডার ব্যয়ভার করপোরেশন ও ধনকুবেরদের ওপর নতুন কর আরোপের মাধ্যমে পূরণ করা হবে, যা থেকে নয়শ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব উঠবে বলে তার দাবি।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
মামদানি একটি বিষয়ে তাঁর অবস্থানে অটল আছেনÑ ইসরায়েলের সমালোচনা ও ফিলিস্তিনি অধিকারের প্রতি তাঁর জীবনব্যাপী সমর্থন।
এই অবস্থান ডেমোক্র্যাটিক দলীয় কাঠামোর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। ইসরায়েলের বাইরে বৃহত্তম ইহুদি জনগোষ্ঠীর শহর নিউইয়র্কে এই অবস্থান অনেক ভোটারের জন্য একটি নির্ণায়ক বিষয় হতে পারে। প্রাইমারি জয়ের পর থেকে মামদানিকে ক্রমবর্ধমান ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি এখন পুলিশি নিরাপত্তা পান এবং তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হুমকির অভিযোগ আনা টেক্সাসের এক ব্যক্তি গ্রেপ্তারও হয়েছে।