গাজাবাসী ঘুরে দাঁড়াবে কীভাবে
যুদ্ধবিধ্বস্ত অবরুদ্ধ গাজায় যেখানে প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক ত্রাণসামগ্রী প্রয়োজন, সেখানে ইসরায়েল অনুমতি দিয়েছে মাত্র ১৪৫ ট্রাক। যুদ্ধ বিরতির মধ্যেই প্রায় প্রতিদিন গাজার বিভিন্ন স্থানে নানা অজুহাতে আক্রমণ করছে ইসরায়েলি বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছেÑ গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্তত ১০ হাজার ফিলিস্তিনির মরদেহ রয়েছে। এই পর্বতসম ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে গাজাকে বাসযোগ্য করার নেই কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাবের আলোকে ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও দিন যতো যাচ্ছে ফিকে হয়ে আসছে চুক্তির বিভিন্ন শর্ত। খবর আল জাজিরার।
খবরে বলা হয়েছে, আরব ও মুসলিম দেশগুলোর মন্ত্রীরা আজ সোমবার ইস্তানবুলে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতি তদারকি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন নিয়েই তারা আলোচনা করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ২৩৬ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন ৬০০ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এছাড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া আরও ৩ জনের মরদেহ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়েছেÑ ইসরায়েলের মেগিদ্দো কারাগারে ফিলিস্তিনিদের অবস্থা শোচনীয়। সেখানকার বন্দি ও সাবেক বন্দি বিষয়ক কমিশন জানিয়েছেÑ ফিলিস্তিনিদের মারধর করা হয়, চিকিৎসার পরীক্ষা করা হচ্ছে না। এদিকে ইসরায়েল যেসব ফিলিস্তিনি বন্দির মরদেহ ফেরত দিচ্ছে, তাদের মরদেহেও মিলছে কৌশলগত নির্যাতনের চিহ্ন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
বন্দি অধিকার গোষ্ঠী আদ্দামিরের হিসাব অনুযায়ী ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে এখনও ১০ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি রয়েছে।
বাস্তচ্যুতদের ঠাঁই হচ্ছে ‘আরাফাত ভিলায়’
একসময়ের বিলাসবহুল ‘আরাফাত ভিলা’ই এখন গাজার বাস্তুচ্যুত কয়েকটি পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাটিতে অন্যান্য ভবনের মতোই ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে প্রয়াত ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের এই বাসভবন। ক্ষতিগ্রস্ত দেয়াল, পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র, এমনকি ধুলোবালিতে আজও সেখানে ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে জড়িত ইতিহাসের ছাপ বহন করছে। এখন সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই কিছু মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
২০০৪ সালে আরাফাতের মৃত্যুর পর বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছিল। সেখানে তার স্মৃতি রক্ষার্থে তৈরি করা ম্যুরালের আশপাশেও ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। এটি গাজা সিটির রিমাল এলাকায় অবস্থিত এবং দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইসরাইলি বিমান হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশরাফ নাফেথ আবু সালেম নামে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ আরও কয়েকটি পরিবার ওই বাসভবনে আশ্রয় নিয়েছে। সালেম জানান, তিনি বাড়িটির আঙিনার ধ্বংসস্তূপ সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেগুলোর বেশিরভাগই পুড়ে গেছে।