জ্বালানির ৮ সংস্থায় সাড়ে ৩ হাজার অডিট আপত্তি

লুৎফর রহমান কাকন
০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০২
শেয়ার :
জ্বালানির ৮ সংস্থায় সাড়ে ৩ হাজার অডিট আপত্তি

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জ্বালানি বিভাগের আটটি সংস্থায় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি অডিট আপত্তি জমা হয়ে আছে। এসব অডিট আপত্তি দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। সূত্র মতে, অক্টোবর মাসে প্রথম দিকে জ্বালানি বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জ্বালানি বিভাগের আটটি সংস্থার অডিট আপত্তি নিয়ে আলোচনা হয়। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দ্বি-পক্ষীয় , ত্রি-পক্ষীয় সভার সংখ্যা বাড়িয়ে অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির কথা বলা হয়।

জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে জ্বালানি বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানি ও সংস্থায় কয়েক হাজার অডিট আপত্তি জমা পড়ে। গত বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ১৫টি কোম্পানি ও সংস্থার প্রায় সাড়ে ১১ হাজার অডিট আপত্তি ছিল, অঙ্কের হিসাবে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ২ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। তবে গত দেড় বছরে অনেক কমে এসেছে। সর্বশেষ জ্বালানি বিভাগের এক হিসাবে দেখা যায়, এখন আটটি কোম্পানির অডিট আপত্তি ৩ হাজার ৬৩১টি জমা পড়ে আছে, আর্থিক অঙ্কে যার পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি টাকা।

সর্বশেষ চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পেট্রোবাংলার আওতাধীন কোম্পানিগুলোর অডিট আপত্তির সংখ্যা ২ হাজার ১৯৯টি, আর্থিক অঙ্কে যার পরিমাণ ১ কোটি ৭০ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮০ দশমিক ৭৭ টাকা। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) আওতাধীন কোম্পানিগুলোর অডিট আপত্তির পরিমাণ ১ হাজার ৩৭৪টি, আর্থিক অঙ্কে যার পরিমাণ ৮৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১ দশমিক ৮০ টাকা। এ ছাড়া সরকারি কোম্পানি জিএসবির ১০টি, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, বিএমডি, বিপিআই, হাইড্রোকার্বন ইউনিট, বিইআরসির প্রায় শতাধিক অডিট আপত্তি অনিষ্পন্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনার নানা জটিলতার কারণে বছরের পর বছর একই ইস্যুতে অডিট আপত্তি ঘুরতে থাকে বছরের পর বছর। কোনো কোনো অডিট আপত্তি বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে, কারণ সংশ্লিষ্টরা এগুলো সমাধানে আন্তরিক চেষ্টা করে না। অথচ সরকারের আলাদা একটি অডিট দপ্তর রয়েছে। জ্বালানি বিভাগের কোম্পানিগুলোর বিশেষ করে গত ১৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। সঙ্গত কারণে এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক অনিয়ম, ত্রুটি আর অব্যবস্থাপনাও হয়েছে। ফলে অডিট আপত্তি হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এসব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে বছরের পর বছর এগুলো গতানুগতিক ধারায় চলতে থাকে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, সরকারের আর্থিক বিষয়গুলোতে যদি অডিট অধিদপ্তর সততার সঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণ করত, তাহলে সরকারি কেনাকাটায় অনেক অনিয়ম কমে যেত। তবে বিগত সময়ের অনেক আপত্তি গত এক দেড় বছরে সমাধান করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি কোম্পানি ও সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যার যার অডিট আপত্তি দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।