ধানের দেশে কমলা চাষে আনিছুরের সাফল্য

শাহজাদা তোহামিন, দশমিনা (পটুয়াখালী)
০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:১৮
শেয়ার :
ধানের দেশে কমলা চাষে আনিছুরের সাফল্য

ধানের দেশ পটুয়াখালীর দশমিনায় সমতল জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে সফল হয়েছেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা কাজী আনিছুর রহমান। দেড় বছর আগে কৃষি বিভাগের পরামর্শে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানী গ্রামে নিজের খামারে পরীক্ষামূলকভাবে কমলা চাষের উদ্যোগ নেন তিনি। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদিত এ কমলা থেকে ভবিষ্যতে বছরে পাঁচ লাখ টাকা আয়ের প্রত্যাশা তার।

জানা যায়, উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে দেড় বছর আগে যশোরের বেনাপোল এলাকার একটি বাগান থেকে চায়না থ্রি, ম্যান্ডারিন ও দার্জিলিং জাতের ১৫০টি চারা কিনে এনে নিজের প্রায় এক একর জমির বাগানে রোপণ করেছিলেন কাজী আনিছুর রহমান। চারার মূল্য, পরিবহন খরচ, রোপণ ও পরিচর্যাসহ এ যাবত এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার।

কৃষক কাজী আনিছুর রহমান আমাদের সময়কে জানান, ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারগুলোতে তার বাগানের কমলা বিক্রি শুরু করেছেন। গ্রামীণ বাজারগুলোতে এর চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া উৎসুক দর্শনার্থীরা সরাসরি বাগানে এসে কিনে নিচ্ছেন কমলা। চলতি বছর এখন পর্যন্ত অর্ধ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছেন তিনি। কেজিপ্রতি সর্বনিম্ন ২০০ ও সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা দাম পেয়েছেন। এ বছর আরও প্রায় অর্ধ লাখ টাকার কমলা বিক্রির প্রত্যাশা রয়েছে তার।

সরেজমিন দেখা যায়, বিক্রির পরও প্রতিটি গাছে গড়ে আট থেকে ১০ কেজি কমলা রয়েছে। থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা সবুজ হলুদ রঙের কমলাগুলো দৃষ্টি আকর্ষণ করছে বাগানে আসা প্রতিটি দর্শনার্থীর। কেউ কেউ কিনে বাগানে বসেই খাচ্ছেন কমলা।

ক্রেতা নুরুল আমিন বলেন, এই বাগানের কমলাগুলো যেমনই দেখতে চমৎকার, তেমনই খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু। তা ছাড়া বাজারের কমলার মতো এতে কোনো রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণ নেই। তাই বাজারের চেয়ে এই কমলাগুলো বেশি স্বাস্থ্য উপযোগী।

দর্শনার্থী জাকির হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার মাটিতে এত সুন্দর কমলা হবে আমরা কল্পনা করিনি। আমার কিছু পতিত জমি আছে। উনার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে আমিও চাষ করব।

বেলে-দোআঁশ সমতল ভূমিতে কমলার সফল চাষ সাড়া ফেলেছে পুরো এলাকায়। আমদানি নির্ভরতা কমাতে দেশের মাটিতে কমলার বাগান করতে চাইলে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কাজী আনিছুর রহমানকে সার্বিক সহযোগিতা ও কারিগরি পরামর্শ দিয়ে আসছি। চায়না থ্রি জাতের কমলাটি বেশি মিষ্টি হওয়ায় এটির বাজারমূল্য বেশি পাবে। কমলার চাষ বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে আমদানি কমতে থাকবে। তাতে প্রতি বছর সরকারের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।