মালয়েশিয়া পাচারকালে সৈকত ও পাহাড় থেকে নারীসহ ৫০ রোহিঙ্গা উদ্ধার
ককসবাজের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া উপকূলীয় সৈকত ও পাহাড়ে পৃথক অভিযান চালিয়ে মালয়েশিয়া পাচারকালে নারী শিশুসহ ৫০ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটিলিয়ন (র্যাব-১৫) ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) র্যাব-১৫ সহকারী পরিচালক লে. অ্যান্ড মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক জানান, বুধবার ভোরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সিপিসি-২ হোয়াইক্যং ক্যাম্প ও সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্প সদস্যরা যৌথ আভিযানিক দল টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের উত্তর শীলখালী গহীন পাহাড়ে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা চিরুনী অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় জিম্মি ২৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মালয়েশিয়া নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পাহাড়ে জিম্মি রাখে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা। এ সময় পাচারকারী দালাল চক্রের সদস্যরা র্যবের উপস্থিতি টের পেয়ে পাহাড়ের ভেতর পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তাদেরকে একটি দালাল চক্র ৩/৪ দিন পূর্বে উখিয়া থানাধীন বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে উত্তর শীলখালী পাহাড়ের চূড়ায় রোকসানার ঘরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক আটক করে রাখে।
ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাচারকারী চক্রের ৫ সদ্যসের পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পাচারকারীসহ আরও ৬-৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মানবপাচার আইনে মামলার এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
সম্প্রতি সাগরপথে সক্রিয় হয়ে উঠেছে মানব পাচারকারী চক্র। বিষয়টি মাথায় রেখে র্যাব নিজস্ব গোয়েন্দা নাজরদারি ও মানবপাচার বিরোধী অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার আ. ম. ফারুক।
অপরদিকে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশুসহ বিপুল সংখ্যক ব্যক্তি টেকনাফের বাহারছড়ার জুম্মাপাড়া আব্দুল আলীর ঘাটসংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় ১টি সাম্পান বোটে অবস্থান করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কোস্ট গার্ড বাহারছড়া এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে বোটে থাকা ২৬ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র বিদেশে উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন, উচ্চ বেতনের চাকরি এবং অল্প খরচে বিদেশ যাত্রার প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় গমনে উদ্বুদ্ধ করে সাগর পথে পাচারের পরিকল্পনা করছিল। অভিযান চলাকালীন কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তাদের আটকের কোস্ট গার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে।
আমাদের সময়/আরডি