ব্রিটেনে লেবার পার্টির নতুন উপনেতা লুসি পাওয়েল

এস ইসলাম, লন্ডন থেকে
২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:২১
শেয়ার :
ব্রিটেনে লেবার পার্টির নতুন উপনেতা লুসি পাওয়েল

ব্রিটেনের লেবার পার্টির নতুন উপনেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ম্যানচেস্টার সেন্ট্রালের সংসদ সদস্য লুসি পাওয়েল। গত মাসে অ্যাঞ্জেলা রেইনারের পদত্যাগের পর ঘোষিত এই পদে তিনি শিক্ষামন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসনকে পরাজিত করেন।

দলীয় নির্বাচনে পাওয়েল পান ৮৭ হাজার ৪০৭ ভোট, যা প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিপসনের তুলনায় প্রায় ১৪ হাজার বেশি। ভোটগ্রহণে অংশ নেন প্রায় ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ সদস্য।

ক্যাবিনেট থেকে বাদ পড়ার পর পাওয়েল নিজেকে তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় পার্টির অভ্যন্তরে সাধারণ সদস্য ও স্থানীয় নেতাদের মতামত আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

বিজয়ের পর বক্তব্যে পাওয়েল বলেন, ‘আমাদের দলকে আরও সাহসী হতে হবে। আমি লেবারের নীতি ও আদর্শকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করব, তবে একই সঙ্গে আমাদের কাজের ধরনে পরিবর্তন আনতে পারি।’

তিনি জানান, উপনেতা হিসেবে তার প্রথম লক্ষ্য হবে এমন সব কণ্ঠকে সামনে আনা যারা মনে করেন বর্তমান সরকার যথেষ্ট সাহসী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।

রিফর্ম ইউকে পার্টির উত্থান প্রসঙ্গে পাওয়েল বলেন, আমাদের নিজেদের রাজনৈতিক বক্তব্যকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব পুনরুদ্ধার করতে হবে। অন্য দলের অনুকরণ নয়, বরং জনগণের কাছে আমাদের নিজস্ব অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।’

অন্যদিকে, পরাজয়ের পর ফিলিপসন পাওয়েলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘এখন লেবার পার্টির উচিৎ একত্র হয়ে আগামী ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া।’

শুরুতে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা সীমিত হয় পাওয়েল ও ফিলিপসনের মধ্যে। শুরুতে ফিলিপসন এমপি ও ইউনিয়ন মহলে অগ্রগামী ছিলেন, তবে পরবর্তীতে তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থন পাওয়েলের পক্ষে গড়ে ওঠে।

গ্রেটার ম্যানচেস্টারের মেয়র অ্যান্ডি বার্নহামের মতো নেতৃত্ব সমালোচনামূলক ব্যক্তিরাও তাকে সমর্থন দেন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি বারবার উল্লেখ করেন, ‘পার্টি কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত ভুল করেছে। বিশেষ করে কল্যাণভাতা ও শীতকালীন জ্বালানি সহায়তা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে।’

তবে ৫৪ শতাংশ বনাম ৪৬ শতাংশ ব্যবধানের এই জয় লেবার নেতৃত্বের প্রতি সদস্যদের সম্পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করছে না বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। নিম্ন ভোটহারও (১৬ দশমিক ৬ শতাংশ) ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দলীয় সদস্যদের বড় অংশ অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে আগ্রহ হারিয়েছে।

অ্যাঞ্জেলা রেইনারের পদত্যাগের পর উপনেতার পদটি এখন শুধুমাত্র পার্টির দায়িত্বে সীমাবদ্ধ, যদিও পাওয়েল লেবারের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

আগামী কয়েক মাস লেবার পার্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসেবে দেখা হচ্ছে। চ্যান্সেলর রেচেল রিভসের বাজেট উপস্থাপন, ইংল্যান্ডের স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের ভোট—সব মিলিয়ে পাওয়েলের নেতৃত্ব দলকে সংগঠিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।