ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৪৮
শেয়ার :
ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে আবুল কাশেম (৫০) নামে এক মাটি ব্যবসায়ীকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাইমুড়ী গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত আবুল কাশেম ওই এলাকার আবেদ ভূঁইয়া বাড়ির মৃত দুধ মিয়ার ছেলে। তিনি মাটি ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন সোনাইমুড়ি গ্রামের হাবিবুল্লাহ ডাক্তার বাড়ির মাইন উদ্দিন (৫০), মাইনউদ্দিনের ছেলের রাকিব (২০), জামাদার বাড়ির আবুল খায়ের মাস্টার (৭০)।

স্থানীয় ও নিহতের স্বজনদের বরাতে জানা যায়, কয়েক দিন আগে একই এলাকার যুবকদের মধ্যে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সালিস বৈঠকের কথা থাকলেও তা অনুষ্ঠিত হয়নি। বিকেলে একই মাঠে পুনরায় খেলাধুলা চলাকালে পূর্বের বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও তর্কবিতর্ক শুরু হয়।

একপর্যায়ে জমিদার বাড়ির আবুল খায়ের মাস্টার, তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ও ওমর ফারুকসহ কয়েকজন; অন্যদিকে হাবিব উল্যা পশু ডাক্তার বাড়ির মাইন উদ্দিন ও তার ছেলে রাকিব সংঘবদ্ধভাবে আবুল কাশেম ও তার ছেলে সোহাগের ওপর চড়াও হয়। তারা সোহাগকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে এবং আবুল কাশেমকে ইট দিয়ে বুকে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয় লোকজন আহত কাশেমকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহতের ছেলে সোহাগ বলেন, ‘বাবা মানুষকে শান্ত করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তারা উল্টো বাবাকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে। ইট বুকে লাগার পর তিনি পড়ে যান, তারপরও তারা নির্মমভাবে মারতে থাকে।’

এদিকে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জানান, ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বের বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছে।

আমাদের সময়/আরডি