ভালুকায় বন বিভাগের ‘হয়রানির’ প্রতিবাদে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ
ময়মনসিংহের ভালুকায় বন বিভাগের অব্যাহত হয়রানি, মামলা-হামলা ও উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে তা বন্ধ করাসহ ৪ দফা দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
উপজেলার উথুরা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে বন বিভাগের হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বন বিভাগের হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. লিমন, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বসবাসরত সাধারণ জনগণের ওপর বন বিভাগের হয়রানিমূলক মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার ও জুলুম বন্ধ করতে হবে; বসবাসরত মানুষের জমি ও বসতভিটার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অবৈধ গেজেট বাতিল করতে হবে; বসবাসরত মানুষের বসত ভিটায় নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণে কোনো প্রকার বাধা ও উচ্ছেদ করা যাবে না; স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে বন রক্ষার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ক্যারন থেকে প্রাপ্ত সুফল প্রকল্পে সিন্ডিকেট মুক্ত করে সুষম বণ্টন করতে হবে।
এই মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে বন বিভাগের হয়রানি চলছে। সম্প্রতি কোনো নোটিশ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ছাড়া ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে, এতে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বসবাসরত নাগরিকদের বাপ-দাদার ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় আইনের অপপ্রয়োগ করে নিঃস্ব করে দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় বক্তারা আরও বলেন, সংবিধানে নাগরিকের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে বাধ্য করে। যেখানে মানুষের স্থায়ী বসতি ও আইনি জটিলতা রয়েছে, সেখানে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া, নোটিশ, বিকল্প পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া উচ্ছেদ সম্পূর্ণ অন্যায়।
সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাহ মো. লিমন বলেন, ‘যার কোনো বাসস্থান নেই, তার জীবন বৃথা। সে বেঁচে থেকেও মৃত। আমরা যেহেতু মরেই গেছি, আমাদের বাসস্থানের অধিকার ছিনিয়ে নিলে আরেকবার মৃত্যুবরণ করতে চাই। একটি রাষ্ট্রের নাগরিকের অন্যতম অধিকার হলো বাসস্থান। বাসস্থানের অধিকার কেউ খর্ব করতে পারে না। এ সময় তিনি চার দফা দাবি ঘোষণা করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বন বিভাগের উথুরা রেঞ্জ অফিসের রেঞ্জ কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা সরকারি সম্পদ রক্ষায় কাজ করছি।’
আমাদের সময়/আরডি