তেল, ডিমের দাম বাড়তি /

স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

অনলাইন ডেস্ক
২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৫৪
শেয়ার :
স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারে

সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে ডিম, তেল ও সবজির দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে স্বস্তি নেই নিত্যপণ্যের বাজারেও।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ, কাওরান বাজার, শান্তিনগর ও তুরাগ এলাকার নতুনবাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন পণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া যায়। 

বাজারে বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বর্তমানে সবজি ও মাছের দাম বেশি হওয়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে ডিমের দাম বাড়তি।

বাজারে ফার্মের প্রতি ডজন বাদামি রঙের ডিম ১৪৮ থেকে ১৫০ টাকা ও সাদা রঙের ডিম ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে যথাক্রমে ১৪০ ও ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ডিমের দাম বাড়লেও ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বাড়েনি। আগের দরেই প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দাম বাড়তি প্রসঙ্গে বিক্রেতারা বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বেশি হওয়ায় ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তাই ডিমের দাম কিছুটা বাড়তি।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এখনো অনুমোদন না দিলেও খুচরাবাজারে বেড়েছে সয়াবিন, পামঅয়েলের দাম।

প্রতি পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনে ১০ টাকা বেড়ে ৯১০ থেকে ৯৩০ টাকা ও এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিনে দুই টাকা বেড়ে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, প্রতি লিটার পামঅয়েলে দুই টাকা বেড়ে ১৫৫ থেকে ১৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তাদের বাজারদরের প্রতিবেদনে সয়াবিন ও পামঅয়েলের দাম বাড়ার বিষয়টি জানিয়েছে। 

এছাড়া রাজধানীর বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো সবজির দাম বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি পটোল ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি ছিল। অন্যান্য সবজির দামেও চড়াভাব রয়েছে। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে প্রতি কেজি বেগুন ১০০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, বরবটি, ঢ্যাঁড়শ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সবজির এই দাম মানভেদে কমবেশি হয়ে থাকে। সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকায়। 

বাজারে শীত মৌসুমের শিম, ফুলকপি ও বাঁধাকপি উঠেছে। তবে দাম বেশ চড়া। প্রতি কেজি শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, ছোট আকারের একটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

আগামী দু–তিন সপ্তাহে সবজির দাম কমার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

বাজারে আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর পেঁয়াজের কেজি আগের মতোই ৮০ টাকা।

চালের দামে কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭০–৮০ টাকা, নাজির ৭০–৮৫ টাকা, ব্রি–২৮ চাল ৫৬–৫৮ টাকা ও মোটা (স্বর্ণা) চাল ৫২–৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির পাশাপাশি বাজারে মাছের দামও চড়া। চাষের মাছের দামে কিছুটা স্বস্তি থাকলেও নদীর মাছ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে প্রতিকেজি বোয়াল আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা, কোরাল ৬৫০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, চাষের রুই, কাতল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙাশ ২০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৯০০ টাকা, শোল ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগে বাজার করতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফাহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘বাজারের যে পরিস্থিতি, তাতে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কীভাবে টিকে থাকবো সেটা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে সব কিছুর দাম বেশি, কম বলে কিছু নাই।’

আরেক ক্রেতা অন্তরা মাহি বলেন, ‘কোনও কিছু যদি আগে দুই কেজি কিনতাম সেটা এখন কিনি এক কেজি। কারণ দুই কেজি কেনার পয়সা আমার নাই। এটাই সত্য। উচ্চ বাজারমূল্য প্রতিদিন আমার মতো সাধারণ মানুষের ওপর চাপ তৈরি করছে।’

আমাদের সময়/এআই