ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে কী হবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২১:২৪
শেয়ার :
ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে কী হবে

জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে একটি নজিরবিহীন বোমা হামলা চালায়। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি আবাসিক এলাকাগুলোকে টার্গেট করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। একইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।

এই সংঘাত এপ্রিলে শুরু হওয়া তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে পরমাণু আলোচনাকে ব্যাহত করে। ২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। এখন যদি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় তবে পরিস্থিতি কী হতে পারে? জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, তেহরানের সাথে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে ‘পুনরায় শক্তি প্রয়োগের’ আশঙ্কা করছেন তিনি। 

সুইস সংবাদপত্র ‘লে টেম্পসের’ সাথে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যদি কূটনীতি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমি পুনরায় শক্তি প্রয়োগের আশঙ্কা করছি’। 

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বৃহস্পতিবার বলেছেন, গ্রোসির মন্তব্য ‘উদ্বেগের বশে নাকি হুমকি হিসেবে’ তা স্পষ্ট নয়। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘কিন্তু যারা এই ধরনের হুমকি দিচ্ছেন তাদের বুঝতে হবে যে একটি ব্যর্থ অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করলে তা কেবল আরেকটি ব্যর্থতার দিকেই নিয়ে যাবে’।

১২ দিনের যুদ্ধের পরপরই ইরান এবং আইএইএ’র মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। তেহরান ইসরাইলি ও মার্কিন হামলার পর্যাপ্ত নিন্দা জানাতে আইএইএ’র ব্যর্থতার কারণে সংস্থার সাথে সহযোগিতা স্থগিত করে।

সেপ্টেম্বরে, ইরান এবং আইএইএ একটি নতুন সহযোগিতা কাঠামোতে সম্মত হয়। তবে কয়েক সপ্তাহ পরে ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানি ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অধীনে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাগুলো ফিরিয়ে আনার পর তেহরান সেই কাঠামোটিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করে।

২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে আসার পর এই চুক্তি কার্যকরভাবে বাতিল হয়ে যায়।

সাক্ষাৎকারে গ্রোসি বলেছেন, যুদ্ধের পর থেকে ইরান ‘পরিদর্শনের ওপর সীমা আরোপ করেছে কারণ, এটি তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ এবং শুধুমাত্র পরিদর্শকদের "অল্প পরিমাণে" অনুমতি দিয়েছে।

আইএইএ’র মতে, ইরানই একমাত্র দেশ যেখানে পরমাণু অস্ত্র নেই। তবে তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা বোমার জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।

গ্রোসি বলেছেন, ‘যদি ইরান পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে ইরানের কাছে প্রায় ১০টি পরমাণু বোমা তৈরির পর্যাপ্ত উপকরণ থাকবে’। তিনি বলেছেন, ‘তবে, আমাদের কাছে এমন কোনো প্রমাণ নেই যে, তেহরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে।’