সিরাজগঞ্জে ২৫৫ জন এইডস রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ২৬

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
২৩ অক্টোবর ২০২৫, ২০:৪৭
শেয়ার :
সিরাজগঞ্জে ২৫৫ জন এইডস রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ২৬

সিরাজগঞ্জে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইচআইভি এইডস রোগীর সংখ্যা। এতে জেলাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে জেলায় ২৫৫ জন পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। গত পাঁচ বছরে ইএ রোগে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য জেলাগুলোর চেয়ে সিরাজগঞ্জ এখন রেড জোনে বলেও শঙ্কিত চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি সেন্টারের দেওয়া তথ্যমতে, সিরাজগঞ্জ জেলায় ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। তবে এবার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ৭৩ শতাংশই মাদকসেবী। ২০২০ সালে চারজন, ২০২১ সালে আটজন, ২০২২ সালে এই রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ৮১। পরবর্তী সময়ে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে তুলনামূলক স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকলেও এবার তা বেড়েছে কয়েকগুণ।

হাসপাতালের এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সেলিং সেন্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা নিষিদ্ধ নেশা জাতীয় ইনজেকশনের মাধ্যমে এই রোগ বেশি ছড়াচ্ছে। আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধের পাশাপাশি কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। জেলায় ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১৮৭ জন মাদকসেবী, সাধারণ ৩৫ জন, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ২৯ জন এবং চারজন যৌনকর্মী।

তিনি আরও বলেন, ‘একবার টেস্টের পর যদি ফলাফল পজিটিভ হয়, তখন আমরা তাদেরকে এখানে আসতে বলি এবং তাদের নিয়ে কাউন্সেলিং করা হয়। এখানে মূলত আমরা আগের রিপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য রি-টেস্ট করে থাকি। সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা নিয়মিত বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সেবা পেয়ে অনেকটাই ভালো রয়েছেন।’ তার মতে, এই রোগের জন্য সিরাজগঞ্জ অনেকটাই রেড জোন।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আকিকুন নাহার বলেন, ‘সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষরাই বেশি ইনজেকটিভ ড্রাগ শেয়ারিং করে ব্যবহার করছেন। একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদকসেবন করায় রক্তের মাধ্যমে এটা ব্যাপকভাবে শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে শনাক্তের সিংহভাগই মাদকসেবী। আমরা আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মনোবল বাড়াতে কাউন্সেলিং করছি। তবে ইনজেকশনে ড্রাগ ব্যবহার কমাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হতে হবে।’

অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অবৈধ নেশা জাতীয় ইনজেকশন বেচাকেনায় জড়িতদের আটকে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ২ বছরে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৯০০ অ্যাম্পুল ইনজেকশন ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

আমাদের সময়/আরডি