প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যা বললেন নাহিদ ইসলাম

অনলাইন ডেস্ক
২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:১০
শেয়ার :
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যা বললেন নাহিদ ইসলাম

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক করেছেন এনসিপির প্রতিনিধিদল। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৫টার পর তারা বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে এনসিপি আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে সেনাবাহিনীর কয়েকজনকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে, আমরা এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছি। সরকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতি আমরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছি। যে ন্যায়বিচারের একটি ধাপ আমরা আগাচ্ছি, কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পাশাপাশি সারাদেশে জুলাই শহিদ ও আহতদের পক্ষ থেকে যে মামলাগুলো করা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে সরকারের কী পদক্ষেপ? আমরা দেখতে পাচ্ছি পত্র-পত্রিকায় যে জামিনে আসামিরা ছাড়া পাচ্ছে এবং তারা শহিদ পরিবার ও আহতদেরকে হুমকি দিচ্ছে। ফলে সেই জায়গায় শহিদ পরিবার ও আহতদের নিরাপত্তা (নিশ্চিত)। ’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমরা উদ্বেগ জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কমিশনের বর্তমান আচরণ আমাদের নিরপেক্ষ মনে হচ্ছে না, স্বচ্ছ হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম করার কথা ছিল সেগুলো করছে না।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে পক্ষপাতিত্ব দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু দলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ দেখা যাচ্ছে। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে দায় সরকারের ওপর আসবে। তাই এ বিষয়ে সরকারকে আমরা বলেছি। আমরা মনে করি এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রয়োজন।’

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘জুলাই সনদ দিয়ে আমরা আমাদের অবস্থান সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। জুলাই সনদ নিয়ে কাগজে-কলমে বিশ্বাসী নয় এনসিপি। বাস্তবায়ন কীভাবে হবে, সেই নিশ্চয়তা পাওয়ার পরই আমরা স্বাক্ষর করব।’

 তিন দাবির বিষয়ে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের আদেশ শুধু ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন, নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকারিতা থাকবে না, গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে- এই তিনি দাবি বিবেচনা করলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করব।’

জুলাই সনদ নিয়ে প্রস্তাবিত বিষয়গুলো ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করবেন বলে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন বলেও জানান নাহিদ ইসলাম।  

তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসনের ব্যাপারে আমরা সরকারকে জানিয়েছি। আমরা শুনতে পাচ্ছি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দলের ভাগ বাটোয়ারা হচ্ছে।’

উপদেষ্টা পরিষদের দক্ষতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি- ছাত্র উপদেষ্টাদের যদি কোনো নির্দিষ্ট দলের সংশ্লিষ্ট হিসেবে দেখা হয়, তাহলে অন্যান্য দলের সুপারিশে যারা উপদেষ্টা পরিষদে ঠাঁই পেয়েছেন তাদেরও একইভাবে দেখতে হবে।’

বৈঠকে এনসিপির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। প্রতিনিধিদলে আরও আছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।

সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার থেকে দলীয় লোক অপসারণে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

আমাদের সময়/জেআই