থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ৩৪ বছরে পদার্পণ

বিনোদন ডেস্ক
২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৩৯
শেয়ার :
থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ৩৪ বছরে পদার্পণ
ছবি : সংগৃহীত।

দেখতে দেখতে থিয়েটার আর্ট ইউনিট ৩৪ বছরে পদার্পণ করল। বিষয়টি একটি নাটকের দলের জন্য যেমন গর্বের বিষয় তেমনি দলের প্রত্যেকেই এই গর্বের অংশীদার।

এস এম সোলেয়মান প্রতিষ্ঠিত দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ও শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলে সন্ধ্যা ৭ টায় নাটক ‘বলয়’ এর দুটি প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় মোকাদ্দেম মোরশেদ।

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের প্রধান সম্বনয়ক ও অভিনেতা কামরুজ্জামান মিল্লাত এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের নবনাট্য আন্দোলনের অন্যতম কৃতি পুরুষ ও থিয়েটার আর্ট ইউনিট-এর প্রতিষ্ঠাতা এস এম সোলায়মান ব্যক্তিগত জীবনচারিতায় ছিলেন যেমন উজ্জ্বল-তারুণ্যময় তেমনি তার সৃজনকর্মের চিন্তা, মনন ও প্রয়োগে ছিল তারুণ্যের ব্যাপক প্রভাব। অকালপ্রয়াত এ নাট্যজন ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই তারুণ্যের প্রতীক। তারুণ্যের প্রতি তার ছিল আজীবন পক্ষপাত। তারুণ্য চিরকালই দ্রোহী, ঋজু, অগ্রসরমান, অপঙ্কিল এবং বাঁধভাঙা জোয়ারের মত জরাধ্বংসী ও সৃজনশীল।

তিনি আরও বলেন, সেই তারুণ্যকে মহিমাম্বিত করতে এবং এস এম সোলায়মান-এর সম্মান ও স্মৃতি রক্ষার্থে থিয়েটার আর্ট ইউনিট ২০০৫ সালে প্রবর্তন করে ‘এস এম সোলায়মান প্রণোদনা’। বাংলাদেশ নাট্যচর্চায় সৃজনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য প্রতিভাবান ও মেধাবী তরুণ নাট্যকর্মী বা শিক্ষার্থী বা সংগঠন বা সংস্থাকে উৎসাহ দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রতি বছর এ প্রণোদনা প্রদান করা হয় ।এবারও পদক ইতিমধ্যে প্রদান করা হয়েছে।এবারে দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তরুন নাট্যকার ও নির্দেশনকের নাটকের পরপর দুদিনের মঞ্চায়ন এক অর্থে এস এম এস সোলায়মানের ভাব ও আদর্শের আন্তরিক উদযাপন।

নাটকের গল্পে দেখা যাবে, রাজনৈতিক বলয়সহ সামগ্রিক পারিপার্শ্বিক বলয়ের একটা স্থানান্তর ঘটেছে। এক বলয় থেকে অন্য বলয়ে আমরা স্থানান্তরিত হয়েছি। বলয় কিন্তু রয়েই গেছে। বলয় থেকে বলয়ে গমন অথবা আটকে পড়া বলয়ে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের স্পন্দন, অনুকূলে বা প্রতিকূলে মুক্তিহীন বলয়বন্দী বহমান এই জীবন- এ উপলব্ধিই ‘বলয়’ নাটকের চিন্তা সূত্র। এতে আছে চরিত্রের স্ববিরোধী অবস্থান; নিজেকেই নিজে বিশ্লেষণ করার একটি ইচ্ছা।

‘বলয়’ অন্তর্দন্দের একটি নাটক। একটি চক্র, একটি বলয় ঘিরে রেখেছে আমাদের প্রত্যেককে । সামাজিক বলয়, রাজনীতির বলয়, ধর্মীয় বলয়, যুক্তি-অযুক্তির বলয়, ক্ষমতার বলয়, শোষণের বলয়, শাসকের বলয়। বলয়বৃত্তে ছটফট করা প্রাণ ছুটে যেতে চায় মুক্ত হতে চায়; হয়তো ছুটে যায়ও কিন্তু পড়ে যায় আরেক বলয়ে।

‘বলয়’ নাটকটি এগিয়ে গিয়েছে মূলত তিনটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে এরা হলেন রাজনীতিক, বিজ্ঞান চিন্তক ও ধর্মতাত্ত্বিক। তারা গিয়েছেন মনবিশ্লেষকের কাছে কাউন্সিলিংয়ের জন্য কারণ তাদের উপলব্ধি, তারা একটি বলয়ের মধ্যে আটকে গেছেন। হাঁপিয়ে উঠেছেন তারা, বলয় থেকে মুক্ত হতে চান। বিজ্ঞান ধর্ম রাজনীতির কথা, যুক্তির পিঠে যুক্তি, যুক্তি খন্ডন, আস্থা অনাস্থা অনুভবের কথা, তারা ফিরে যায় তাদের আপন সত্ত্বায়।

নিজের সঙ্গেই নিজের কথোপকথন। সংলাপ‌ই এই নাটকের প্রাণ। চমৎকার অর্থপূর্ণ সংলাপ গুলো জাগিয়ে তোলে কিছু প্রশ্ন অথবা অনুসন্ধানের ইচ্ছা। এই কনটেম্পোরারি অন্তর্দ্বন্দ্বের নাটকটি যেন নিজেকেই নিজে বিশ্লেষণ করে দেখিয়ে দেয় নানান অসঙ্গতি অযুক্তির বলয়ে আমাদের বসবাস।ড. বলে, তার কথাই যেন আমজনতার কথা।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রেজাউল আমিন সুজন, স্বাধীন শাহ্, নাহিদ সুলতানা, সেলিম মাহাবুব, বাশরী অনন্যা, রানা সিকদারসহ আরও অনেকে।

আমাদের সময়/কেইউ