সাভার-আশুলিয়া মিলে হচ্ছে সিটি করপোরেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার (ঢাকা)
২২ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
সাভার-আশুলিয়া মিলে হচ্ছে সিটি করপোরেশন


ঢাকার সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবে প্রধান উপদেষ্টা অনুমোদন করেছেন বলে সম্প্রতি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সংযোগ অধিশাখা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব মাহমুদ উল্লাহ মারুফ। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাভার পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিভাগীয় কমিশনার কর্তৃক চলতি বছরের সেপ্টেম্বর প্রথম পক্ষের পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন শুরু করে সরকার।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো প্রস্তাবনায় বলা হয়, অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র ও জনসংখ্যার চাপ মিলিয়ে সাভার এক বিশাল নগর এলাকায় পরিণত হয়েছে। সাভার পৌরসভা থাকলেও তা নাগরিক চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। পৌরসভার সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে ক্রমবর্ধমান নাগরিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। আশুলিয়া অঞ্চলে বিপুলসংখ্যক গার্মেন্টস শিল্প, শ্রমিক বসতি ও আবাসিক এলাকা গড়ে উঠেছে। আশুলিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের পরিকল্পিত নগরায়ণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সুবিধা, নিরাপদ পানি সরবরাহ ও পরিবেশ সংরক্ষণের মতো সেবা নিশ্চিত করার সক্ষমতা নেই। ফলে আশুলিয়ার জনগণকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

অন্যদিকে ঢাকা শহরের প্রসার ও জনসংখ্যার চাপে কেরানীগঞ্জ উপজেলা অপরিকল্পিতভাবে দ্রুত নগরায়ণের মুখোমুখি হচ্ছে। পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান না থাকায় সড়ক, ড্রেনেজ, পানি সরবরাহ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো মৌলিক নাগরিক সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। কেরানীগঞ্জে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম নেওয়া হলে রাজধানীর পাশে একটি আধুনিক উপশহর হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

এ অবস্থায় সাভার পৌরসভা ও আশুলিয়া মিলিয়ে সাভার সিটি করপোরেশন গঠন এবং কেরানীগঞ্জকে ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা বা ডিএসসিসির আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর প্রস্তাবের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করতে বলা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। এর ফলে উন্নয়নবঞ্চিত ও অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের বঞ্চনার কিছুটা হলেও দূর হবে। একই সঙ্গে প্রাপ্য নাগরিক সুবিধা ও মর্যাদা নিশ্চিত করা যাবে।