জাপানের 'লৌহ মানবী' কে এই সানায়ে তাকাইচি?
এক সময় ছিলেন টিভি উপস্থাপিকা, ছিলেন একটি হেভি মেটাল ব্যান্ডের ড্রামার, পরে হন এমপি ও মন্ত্রী। তিনি এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। সানায়ে তাকাইচির দল একটি গুরুত্বপূর্ণ জোটের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করার পর জাপানের পার্লামেন্ট তাকে দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করেছে।
তবে তাকে মোকাবিলা করতে হবে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ যার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা, অবিরাম মূল্যস্ফীতি আর স্থবির মজুরির সাথে লড়াই করা অসংখ্য পরিবার এবং নিম্ন জন্মহারের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার মুখে থাকা একটি দেশকে।
তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের কঠিন সম্পর্ককে মোকাবিলা করতে হবে এবং পূর্ববর্তী সরকারের সময় ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে করা একটি শুল্ক চুক্তির মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
জাপানের নারা অঞ্চলে ১৯৬১ সালে জন্মগ্রহণকারী তাকাইচির বাবা ছিলেন একজন চাকরিজীবী, আর তার মা একজন পুলিশ কর্মকর্তা। রাজনীতির জগতের বাইরেই তিনি বড় হয়েছেন।
এক সময়ের হেভি মেটাল ড্রামার, তাকাইচি অনেকগুলো ড্রাম স্টিক বহনের জন্য পরিচিত ছিলেন, কারণ তিনি তীব্র ড্রামিংয়ের সময় স্টিক বা লাঠিগুলো ভেঙে ফেলতেন।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
তিনি একজন স্কুবা ডাইভার এবং গাড়ির প্রতিও আগ্রহী ছিলেন, তার প্রিয় টয়োটা সুপ্রা এখন নারা জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে।
তার রাজনৈতিক অনুপ্রেরণা আসে ১৯৮০-এর দশকে, যখন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান বাণিজ্য সংঘাত চরমে ছিল।
জাপান সম্পর্কে আমেরিকান ধারণা বোঝার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে তিনি জাপানের সমালোচনাকারী হিসেবে পরিচিত একজন কংগ্রেসওম্যান ডেমোক্র্যাট প্যাট্রিসিয়া শ্রোডারের অফিসে কাজ করতে শুরু করেন।
আমেরিকানদের জাপানি, চীনা ও কোরিয়ান ভাষা আর খাবার মিলিয়ে ফেলতে দেখেছিলেন তাকাইচি; কীভাবে জাপানকে প্রায়শই চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে এক করা হচ্ছিল তা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
তিনি ১৯৯২ সালে তার প্রথম সংসদীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তবে তিনি লক্ষ্যে অটল থাকেন, এক বছর পর একটি আসন জিতে ১৯৯৬ সালে এলডিপিতে যোগ দেন। তারপর থেকে তিনি ১০ বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন, মাত্র একবার হেরেছেন এবং দলের সবচেয়ে স্পষ্টবাদী রক্ষণশীল কণ্ঠস্বর হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
তিনি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা মন্ত্রী, বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে রেকর্ড-ভাঙা মেয়াদসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ভূমিকা পালন করেছেন।
তাকাইচি ২০২১ সালে প্রথম এলডিপির নেতৃত্বের দৌড়ে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু ফুমিও কিশিদার কাছে হেরে যান তিনি। তবে ২০২৪ সালে আবারও চেষ্টা করেন, এবার প্রথম রাউন্ডের ভোটে শীর্ষে থাকলেও শেষ পর্যন্ত শিগেরু ইশিবার কাছে হেরে যান।
এই বছর, তার তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় তিনি জয়লাভ করেন। তার সাম্প্রতিক প্রচারণার সময় স্কুলের একদল শিক্ষার্থীকে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার লক্ষ্য হচ্ছে আয়রন লেডি হওয়া।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস