লালমনিরহাটে ৫৬ ইউপি সদস্যের আ.লীগ-জাপা থেকে গণপদত্যাগ
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মোট ৫৬ জন ইউপি সদস্য তাদের নিজ নিজ দল আ.লীগ-জাপা থেকে একযোগে গণপদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। পদত্যাগকারী ৫৬ জন ইউপি সদস্যের মধ্যে ৪৪ জনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং ১২ জন জাতীয় পার্টি (জাপা) সমর্থিত।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন পরিষদ হল রুমে এক জরুরি সভায় একত্রিত হয়ে তারা এই ঘোষণা দেন।
জানা যায়, পদত্যাগকারী ইউপি সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-তে যোগদানের ঘোষণা দেন। এদিকে বাকিরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদানের ঘোষণা দেননি। তবে তারা জানিয়েছেন, পরবর্তীতে সুবিধাজনক সময়ে তাদের সম্মিলিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
এদিন পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া পদত্যাগকারী ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। তারা এক বাক্যে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ভুল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম। এখন আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরেছি এবং দলটির রাজনীতি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছি।’
খুনিয়াগাছ ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাল মিয়া এবং মহেন্দ্রনগর ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ আলীসহ অন্যান্য আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতারা একই সুরে বলেন, ‘আজ থেকে আমরা আর কোনোদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। তবে ভবিষ্যতে ভালো কোনো রাজনৈতিক দল পেলে সেই দলে যোগ দেব।’
একইভাবে মহেন্দ্রনগর ইউপি সদস্য ও জেলা জাপার সদস্য সাহাবুল হকসহ জাতীয় পার্টির সমর্থিত ইউপি সদস্যরাও দল থেকে পদত্যাগের একই কারণ ও মনোভাব ব্যক্ত করেন।
পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া প্রধান বক্তারা হলেন লাল মিয়া (খুনিয়াগাছ ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক), মমতাজ আলী (মহেন্দ্রনগর ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি), সাহাবুল হক (মহেন্দ্রনগর ইউপি সদস্য ও জেলা জাপার সদস্য), আজিজুল ইসলাম (হারাটি ইউপি সদস্য ও হারাটি ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক), ইব্রাহীম মিয়া (খুনিয়াগাছ ইউপি সদস্য ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি)।
স্থানীয় রাজনীতিতে ৫৬ জন ইউপি সদস্যের এই গণপদত্যাগের ঘটনা একটি বিশাল আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পদত্যাগকারী সদস্যরা ভবিষ্যতে কোন রাজনৈতিক দলে যোগদান করবেন, তার ওপর সদর উপজেলার রাজনীতি ও আগামী নির্বাচনের সমীকরণ নির্ভর করবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল।
আমাদের সময়/আরআর