মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড
মাদারীপুরে আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ইজিবাইক চালক মো. সাজ্জাদ হোসেন খানকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার আসামিকে ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশও দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এ রায় ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার চরনচনা গ্রামের মজিবর ফকিরের মেয়ে নিহত দীপ্তি বলাইরচর শামসুন্নাহার বালিকা মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবীর।
তিনি জানান, দীর্ঘ ৬ বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের বাবা মজিবর ফকির মরদেহটি শনাক্ত করে জানান, সেটি তার মেয়ে দীপ্তির (১৫) মরদেহ।
ঘটনার পর মজিবর ফকির মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৮। তদন্তে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ এক সত্য। ইজিবাইক চালক সাজ্জাদ হোসেন খান দীপ্তিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।
র্যাবের তদন্তে জানা যায়, সাজ্জাদ হোসেন পূর্বে শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন এবং ২০১১ সালে মুক্তি পান। এদিকে ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির দিনে চরমুগরিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে দীপ্তি সাজ্জাদের ইজিবাইকে ওঠে। অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় সাজ্জাদ জোর করে দীপ্তিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করেন। পরে মরদেহটি বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে কয়েকটি ইটসহ পুকুরে ফেলে দেন।
এর ২ দিন পর ওই কিশোরীর মরদেহ ভেসে উঠলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা।
দীপ্তির বাবা মজিবর ফকির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার মেয়ের হত্যাকারী আজ আইনের কাছে জবাবদিহি করেছে। আমরা এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পেয়েছি।’
মামলার পিপি শরীফ সাইফুল কবীর বলেন, ‘মামলায় একমাত্র আসামি সাজ্জাদ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস একটি হত্যা ও ধর্ষণ মামলা। আদালত ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।’
আমাদের সময়/আরআর