বিমানবন্দরে পুড়েছে ওষুধের কাঁচামাল /
১৪ দাবি বাপি’র
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা অগ্নিকাণ্ডে দেশের শীর্ষ ৪৫টি ওষুধ কোম্পানির অন্তত ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে গেছে। এতে করে ওষুধ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (বাপি)।
এ দুর্ঘটনায় সার্বিকভাবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এ অবস্থায় তারা সরকারের প্রতি বেশ কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে তেজগাঁও গুলশান লিংক রোডে বাপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে দাবিগুলো উত্থাপন করে।
বাপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্পখাতে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় ৯০ শতাংশই চীন, ভারত ও ইউরোপ থেকে আমদানি করা হয়। অগ্নিকাণ্ডে যেসব কাঁচামাল পুড়ে গেছে তার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক, ভ্যাকসিন, হরমোন, ডায়াবেটিক ও ক্যান্সারসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল। এছাড়া কিছু মেশিনারিজ ও স্পেয়ার পার্টসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা পুনরায় আমদানি সময়সাপেক্ষ হবে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০০ কোটি টাকা, তবে সব কোম্পানির পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া গেলে এই অঙ্ক আরও বাড়বে।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
বাপির ভাষ্যমতে, ‘এই অগ্নিকাণ্ড শুধু তাৎক্ষণিক ক্ষতিই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদন বিঘ্ন ও ঔষধ বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। বিশেষত নারকোটিকস বিভাগ অনুমোদিত কিছু কাঁচামাল পুনরায় আনা সময়সাপেক্ষ ও জটিল হওয়ায় উৎপাদনে বাধা আসবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাপি সরকারের প্রতি বেশ কয়েকটি দাবিও উত্থাপন করে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
১. আগুনে পুড়ে যাওয়া আমদানিকৃত পণ্যের বিপরীতে পরিশোধিত শুল্ক, ভ্যাট ও ট্যাক্স ফেরত দেওয়া।
২. ব্যাংক চার্জ ও সুদ মওকুফসহ নতুন করে কাঁচামাল আমদানিতে সহজ শর্তে এলসি খোলার সুযোগ দেওয়া।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
৩. কার্গো ভিলেজে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে ধার্য কাস্টম ডিউটি ও অন্যান্য চার্জ মওকুফ করা।
৪. কাস্টমস ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে সপ্তাহান্তেও সীমিত আকারে কার্যক্রম চালু রাখার আহ্বান।
৫. নারকোটিকস বিভাগ থেকে অনুমোদিত কাঁচামাল পুনরায় আমদানির জন্য দ্রুত অনুমতি প্রদান।
৬. ক্ষতিগ্রস্ত চালানের দ্রুত মূল্যায়ন ও বীমা দাবি নিষ্পত্তিতে সহযোগিতা নিশ্চিত করা।
৭. সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি সংস্থাকে নিয়ে যৌথভাবে সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ সহ ১৪টি দাবী করে বাপি।
বাপির নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশের ঔষধ শিল্প দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষা, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকার, ব্যাংক, কাস্টমস ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’
আমাদের সময়/এআই