২৫ সেপ্টেম্বর থেকে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা-মাহির

জবি প্রতিনিধি
২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪১
শেয়ার :
২৫ সেপ্টেম্বর থেকে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা-মাহির

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন ছাত্রী বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহির রহমান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে তারা এই পরিকল্পনা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘হত্যার দিনে মাহিরের সঙ্গে তার আরও দুই বন্ধু ছিল। হত্যার জন্য তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার কেনেন। এলোপাতাড়ি ছুরি চালায় মাহির। আর মাহিরকে হত্যার জন্য বলেন বর্ষা।’

এটা বর্ষা ও মাহিরের পরিকল্পিত হত্যা উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘বর্ষার সঙ্গে মাহিরের ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মাঝে আবার বর্ষা জোবায়েদের ওপর দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় বর্ষা মাহিরকে না করে দেয় এবং সে জোবায়েদকে পছন্দ করে বলে জানায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই তার বয়ফ্রেন্ড মাহিরকে জানায় যে জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না। তখন জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা ও মাহির।’ 

প্রাথমিকভাবে জোবায়েদকে হত্যার এই পরিকল্পনা বর্ষা স্বীকার করেননি বলে জানান রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে মাহির ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে সব সত্যতা জানায়। জোবায়েদকে কিভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই পরিকল্পনা করেন তারা। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার শেষ প্রস্তুতি চলছে।’ 

উল্লেখ্য, জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। 

গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স, ক্যামেস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রীর বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

রোববার (১৯ অক্টোবর) আনুমানিক বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় উঠতে সিড়িতে তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিন তলার সিড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় জোবায়েদকে। 

পরবর্তী সময়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন। 

পরে রোববার রাত ১১টার দিকে ওই ছাত্রী বর্ষাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নেয়। ওইদিন রাত ১১টার সময় আরমানিটোলার নূরবক্স রোড়ের নিজ বাসা থেকে তাকে পুলিশ প্রটোকলে গাড়িতে তোলা হয়। সোমবার (২০ অক্টোবর) জোবায়েদকে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। 


আমাদের সময়/এএস