মুশতাকের সাফাই

ক্রীড়া প্রতিবেদক
২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৮
শেয়ার :
মুশতাকের সাফাই

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ২০৭ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও ৭৬ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ দল। এমন জয়ের পর অনেকের কাঠগড়ায় মিরপুরের উইকেট। বিশেষ করে কালো উইকেট, সেøা-বাউন্স নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হচ্ছে না। টাইগার কোচ মুশতাক আহমেদ কিছুটা সাফাই গাইলেন মিরপুরের। জানালেন ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দিল্লি টেস্টে ইনিংসে ১০ উইকেট পেয়েছিলেন অনিল কুম্বলে। তার স্পিন ভেলকির সেই ম্যাচের পিচ ছিল মিরপুরের এখনকার পিচের চেয়েও খারাপ। মুশতাক বলেন, ‘অনেকবার, আমার ক্যারিয়ারে অনেকবার খেলেছি এমন উইকেটে। অনিল কুম্বলে যে ম্যাচে ইনিংসে ১০ উইকেট পেলেন, দিল্লিতে সেই উইকেট এর চেয়েও খারাপ ছিল।

এমন উইকেটে নিজে খেললে ৭-৮টি করে উইকেট পেতেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মুশতাক বলেন, ‘না, কাজটা এতও সোজা না। সত্যি বলছি এত সহজ না। আমার কোচিং পয়েন্ট অব ভিউ হলো- বিশ্বাস রেখে তোমার প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাও। এমন পিচে কখনও তোমাকে কমফোর্ট জোন থেকে বের হতে হবে। রিশাদ দুর্দান্ত বল করেছে, ধারাবাহিকভাবে ভালো লাইন-লেন্থে বল করে গেছে। এখন সে লম্বা সময় ধরে ভালো বল করতে পারে। এটা অত্যন্ত আনন্দের।’

উইকেট স্পিনবান্ধব হলেও প্রক্রিয়া অনুযায়ী পারফরমের কথা বললেন মুশতাক, ‘এমন উইকেট পেলে স্পিনাররা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। যখন আপনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন, তখন আর প্রক্রিয়ার কথা মনে থাকে না। প্রসেস ইজ এভরিথিং। আপনাকে উইকেট পেতে ভালো ওভার করতে হবে, ভালো বল নয়। টার্নিং পিচে আপনাকে মেডেন ওভার করতে হবে, ভালো ওভার করতে হবে, তখন উইকেট আসবেই। তাই ব্যাপারটা সাধারণ- প্রসেস ঠিক রেখে যাও উইকেট আসবেই।’

এ জন্য সেন্ট্রাল উইকেটে লম্বা সময় স্পিনাররা বল করেছেন। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুশতাক বলেন, ‘এ ধরনের পিচে আপনাকে খুব স্মার্ট এবং ফিল্ড পজিশন নিয়ে ধূর্ত হতে হবে। সঠিক ফিল্ড সেট করে আপনাকে ব্যাটসম্যানকে আউট করতে হবে, সে ফ্রন্ট-ফুট না ব্যাক-ফুট প্লেয়ার এবং আপনার গতি (৮৫ বা ৯০+ কিমি/ঘণ্টা) কেমন হবে, তা বুঝে বল করতে হবে। কোচ হিসেবে আমরা তাদের তথ্য দিই এবং প্লেয়ারদের তা মাঠে কার্যকর করতে হয়।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেট শিকার করে প্রায় একাই ম্যাচ জিতিয়েছেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। তরুণ এই স্পিনারের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়েছেন বাংলাদেশ দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদও।

দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে প্রেস কনফারেন্সে এসে রিশাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এই পাকিস্তানি কোচ। মুশতাক বলেন, ‘সত্যি বলতে, এটা ততটা সহজ নয় (৫ উইকেট নেওয়া)। কখনও কখনও বেশি চাপের মধ্যে থাকতে হয়, কারণ আপনাকে সেরাটা দিতে হবে। একজন তরুণ লেগ-স্পিনার হিসেবে আপনি নার্ভাস হতে পারেন। কিন্তু কোচিং দৃষ্টিকোণ থেকে আমার কথা হলো ধরে খেলা। এই পিচগুলো কখনও আপনাকে আরাম দেবে না, তাই কমফোর্ট জোন এবং প্রক্রিয়া থেকেই বের হয়ে আসতে হবে।’

রিশাদের ধারাবাহিকতা নিয়েও আশাবাদী মুশতাক। তিনি বলেন, ‘শতভাগ আমি বিশ্বাস করি (রিশাদ টেস্ট খেলবে)। শেষ চার ইনিংসে, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে যেভাবে বল করেছে, তাতে আমি খুবই খুশি। আমি বিশ্বাস করি, ও টেস্ট ক্রিকেটেও ভালো করবে। একজন লেগ-স্পিনার হিসেবে ওর মধ্যে জেনুইন প্রতিভা আছে। এখন শুধু নিজের প্রক্রিয়াটা ঠিকভাবে ধরে রাখতে হবে।’

রিশাদের মানসিক দৃঢ়তার দিকটিও তুলে ধরেছেন মুশতাক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটের জন্য রিশাদ খুব ভালো হতে পারে, কিন্তু তাকে ভালোভাবে প্রস্তুত করে সেই জায়গায় আনতে সময় লাগবে। ’

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বড় ব্যবধানে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে এবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নামতে যাচ্ছেন ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচের আগের দিন গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সফরকারী দলের ক্রিকেটার খারি পিয়েরে। সেখানে জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই ম্যাচ জেতার চেষ্টা করতে হবে।