মিয়ানমারে সেনা অভিযান, স্টারলিংকের ৩০ রিসিভার জব্দ
মিয়ানমারে অভিযান চালিয়ে স্টারলিংক ইন্টারনেট ডিভাইস জব্দ করেছে সামরিক সরকার। সোমবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। রোববার (১৯ অক্টোবর) ‘ইন্টারনেট প্রতারণা’ কেন্দ্র কেকে পার্কে এই অভিযান চালানো হয়।
জান্তা সরকারের দাবি, বিলিয়ন ডলারের কালোবাজারে স্টারলিংক ব্যবহারের প্রবণতা হঠাৎ বেড়ে গেছে। এরপরই এই অভিযান চালানো হয়।
করোনা মহামারির পর থেকে মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী অরাজক অঞ্চলে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইন্টারনেট প্রতারণা কেন্দ্র বা স্ক্যাম সেন্টার। এসব সেন্টারের কর্মীরা ব্যবসার নামে বা প্রেমের ফাঁদ পেতে বিদেশিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
চীন, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের যৌথ অভিযানে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৭ হাজার কর্মীকে মুক্ত করা হয়। মুক্তি পাওয়া কর্মীদের অনেকেই জানায়, তাদেরকে পাচার করে এনে সুরক্ষিত এই কেন্দ্রগুলোতে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
তবে এ মাসে এএফপি অনুসন্ধানে দেখেছে, পুরনো স্ক্যাম সেন্টারগুলোর স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ চলছে। ছাদে বসানো হচ্ছে ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ডিভাইস।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার’ জানায়, কেকে পার্কে অভিযান চালিয়ে সেনাবাহিনী ৩০টি স্টারলিংক রিসিভার ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশ জব্দ করেছে। প্রায় ২০০টি ভবনে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ২ হাজার ২০০ কর্মীকে পাওয়া গেছে বলে জানায় পত্রিকাটি।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্ক্যাম চক্রগুলো ৩৭ বিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
মিয়ানমারে স্টারলিংকের লাইসেন্স নেই। ফেব্রুয়ারির অভিযানের আগে দেশটির ইন্টারনেট সরবরাহকারীদের তালিকায় এর নামই ছিল না।
কিন্তু এশিয়ান ইন্টারনেট রেজিস্ট্রি ‘এপনিক’ জানায়, জুলাই ৩ থেকে অক্টোবর ১ পর্যন্ত প্রতিদিনই স্টারলিংক ব্যবহার সূচকে শীর্ষে ছিল।
স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, থাইল্যান্ড-মিয়ানমার সীমান্তের মোই নদীর পাশে গড়ে ওঠা প্রায় ২৭টি স্ক্যাম সেন্টারগুলোতে নির্মিত হচ্ছে নতুন অফিস ও আবাসিক ভবন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমার এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্ক্যাম চক্রের কেন্দ্রস্থল। তবে অঞ্চলজুড়েই এসব প্রতারণা কেন্দ্র ছড়িয়ে পড়েছে।