বোয়ালমারীর কাদিরদীতে আগুনে ১৪টি দোকান পুড়ে ছাই
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ১৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ঘর ও মালপত্রসহ প্রায় এক থেকে দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট অন্তত একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দেরিতে পৌঁছায় ক্ষুব্ধ জনতা ফায়ার ফাইটারদের ওপর আক্রমণ চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানান, কাদিরদী কাঁচা বাজার সংলগ্ন বাচ্চু মোল্যার মার্কেটের নাসিরের কাপড়ের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহূর্তেই আগুন আশপাশের দোকানগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে মধুখালি ফায়ার সার্ভিস ও বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই ১৪টি দোকান পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা হলেন লোহা ও হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী মোফাজ্জেল হোসেন, ঔষধ ব্যবসায়ী মো. এনায়েত কবির, জুতা স্যান্ডেল ব্যবসায়ী হাতেম শেখ, টেইলার্স মালিক মো. সেলিম শেখ, কাপড়ের দোকানী কাজী নাসির উদ্দিন, টেইলারিং দোকানী আকিদুল ফকির, কীটনাশক ও বীজ ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ, লাইব্রেরি মালিক আনোয়ার হোসেন পান্টু, চা দোকানী আব্দুল হাই, মুদীখানা ব্যবসায়ী সুমন মোল্যা , প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, মুদি ও কাঁচা মাল বিক্রেতা ফরহাদ শেখ। খাবার হোটেল মালিক শাহজাহান মোল্যা। এছাড়া কম্পিউটার ব্যবসায়ী ও ফ্লেক্সিলডের একটি দোকান পুড়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী এনায়েত কবির বলেন, ‘আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। জমি বিক্রি করা সাড়ে ৫ লাখ টাকা ব্যাংক বন্ধ থাকায় দোকানে রেখেছিলাম। সেইসঙ্গে আমার ফার্মাসিতে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ঔষধ ছিল। কোনো কিছুই বের করতে পারিনি। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আরও আগে এলে কিছু দোকান রক্ষা করা সম্ভব হতো। ফোন করার প্রায় একঘণ্টা পরে তারা এসেছে।’
বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার হিমাংশ শেখর বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কিছু ক্ষুব্ধ জনতা আমাদের ওপর চড়াও হয়। এতে আমাদের একজন সদস্য সামান্য আহত হয়েছেন।’
মধুখালী ফায়ার সার্ভিস ইস্টিশনের ইনচার্জ রাশেদুল আলম বলেন, ‘১৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। এখনও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।’
এ বিষয়ে সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাফিউল আলম মিন্টু বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। সকালে ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বের করব।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন।’
আমাদের সময়/আরআর