যে কারণে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি

অনলাইন ডেস্ক
১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৯
শেয়ার :
যে কারণে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি এনসিপি

জুলাই জাতীয় সনদে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) স্বাক্ষর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। কিন্তু এই সনদে স্বাক্ষর করেনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যে কারণে দলটি স্বাক্ষর করেনি, তার কারণ জানিয়েছে এনসিপির পলিসি ও রিসার্চ উইং। 

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টার দিকে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করার কারণ জানিয়েছে দলটি।

‘এনসিপি কেন জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি?’ শিরোনামে ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘এনসিপি বলেছে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতির পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা দেখার পর সনদে সই করবে। কারণ এনসিপি জুলাই সনদকে স্রেফ রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল কিংবা ফাঁকা প্রতিশ্রুতি মনে করে না। এনসিপি মনে করে জুলাই সনদের প্রধানতম কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক ভিত্তি নির্মূল এবং গণতান্ত্রিক রূপান্তর। এ কারণে এই সনদের সুস্পষ্ট আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি থাকতে হবে বলে এনসিপি মনে করে।’

পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ এক বছর ঐকমত্য কমিশনের সাথে কাজ করে জুলাই সনদ এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি প্রশ্নে একমত হয়েছে। জুলাই সনদ আদেশ> গণভোট> সংবিধানের মৌলিক পরিবর্তনে সক্ষম গাঠনিক ক্ষমতা সম্পন্ন আগামী সংসদ (দ্বৈত ভূমিকা)- এই প্রক্রিয়ায় সনদ বাস্তবায়ন হবে এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। অথচ সনদের অঙ্গীকারনামায় বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ নাই। এনসিপি মনে করে বাস্তবায়ন পদ্ধতির উল্লেখ ছাড়া সনদে স্বাক্ষর করা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল। কারণ অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের করা প্রতিশ্রুতি নিজেরাই ভঙ্গ করেছে।’

এ ছাড়া আরও তিনটি বিষয় এনসিপি উত্থাপন করেছে যা জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া দেখেই সনদে স্বাক্ষর করবে এনসিপি। 

১. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের টেক্সট এবং গণভোটের প্রশ্নটি চূড়ান্ত করে আগেই জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। 

২. জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায়ের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জারি করবেন। 

৩. গণভোটের মাধ্যমে জনগণ যদি জুলাই সনদে রায় দেয়, তবে নোট অব ডিসেন্টের কোনো কার্যকরিতা থাকবে না। গণভোটের রায় অনুযায়ী আগামী নির্বাচিত সংসদ তাদের উপর প্রদত্ত Constituent Power (গাঠনিক ক্ষমতা) বলে সংবিধান সংস্কার করবে। সংস্কারকৃত সংবিধানের নাম হবে: বাংলাদেশ সংবিধান, ২০২৬।

এ সকল বিষয়ের নিশ্চয়তা ছাড়া সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত হবে বলে এনসিপি মনে করে না। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে উল্লিখিত বিষয়সমূহের স্পষ্ট উল্লেখ নিশ্চিত করেই এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে।

পোস্টের শেষে আরও লেখা হয়েছে, অন্য কোনো কোনো দল বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধানের মূলনীতি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সনদে সই করেনি। তাদের সাথে এনসিপির সই না করার মৌলিক পার্থক্য সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব।


আমাদের সময়/এএস