রকস্টার বেঁচে আছেন গানে গানে
আইয়ুব বাচ্চুর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু। আজ প্রখ্যাত এই গিটার জাদুকরের চলে যাওয়ার দিন। ২০১৮ সালের এই দিনে অগণিত ভক্ত-শ্রোতাকে কাঁদিয়ে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রকস্টার বেঁচে আছেন গানে গানে। গিটারের মূর্ছনায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবেন যুগের পর যুগ। আজকের দিনটি পারিবারিকভাবে আইয়ুব বাচ্চুর পরিবার তাকে স্মরণ করবে।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আইয়ুব বাচ্চুর বাবা ইশহাক চৌধুরী চট্টগ্রাম শহরের জুবিলী রোড এলাকায় একটি বাড়ি কেনেন। এখানেই রক লিজেন্ডের শৈশব-কৈশোর অতিবাহিত হয়। ১১তম জন্মদিনে বাবা তাকে একটি গিটার উপহার দেন। কৈশোর জীবনের শুরুর দিকেই ব্যান্ডের গান শোনা শুরু করেন। ওই সময় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় রক ব্যান্ড লেড জেপলিন, ডিপ পার্পল, কুইন, দ্য জিমি হেনড্রিক্স এক্সপেরিয়েন্সের গানে মুগ্ধ হন। আইয়ুব বাচ্চুকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে জিমি হেনড্রিক্সের গিটার বাজানো।
১৯৭৫ সালে আইয়ুব বাচ্চু ভর্তি হন সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলে পড়াকালে এক বন্ধুর কাছ থেকে ইলেকট্রিক গিটার ধার করে নিয়ে বাজাতেন তিনি। সেটি ছিল একটি টিস্কো গিটার। গিটারের প্রতি এত আগ্রহ দেখে ওই বন্ধু তাকে গিটারটি উপহার দেন। আইয়ুব বাচ্চু গিটার শিখেছেন জেকব ডায়াজের কাছে। কলেজ জীবনেই সহপাঠী-বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল গোল্ডেন বয়েজ। পরে নাম বদলে রাখা হয় আগলি বয়েজ। সেই ব্যান্ডের গায়ক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ এবং বাচ্চু ছিলেন গিটারিস্ট। ১৯৭৭ সালে গিটার বাদক হিসেবে যোগ দেন ব্যান্ডদল ফিলিংসে। তিন বছর পর ১৯৮০ সালে ফিলিংস থেকে সোলসে। তাকে সোলসে নিয়েছিলেন নবীক খান ও তপন চৌধুরী। চট্টগ্রামে ফিলিংসয়ের একটি অনুষ্ঠানে সোলস ব্যান্ডের নকীব খান আইয়ুব বাচ্চুর গিটার বাজানো দেখে মুগ্ধ হন। সোলসের গায়ক তপন চৌধুরী বাচ্চুর ব্যাপারে জানান, তপন চৌধুরীও বাচ্চুর গিটারের মূর্ছনায় অভিভূত হন। পরবর্তী দশ বছর মূল গিটার বাদক এবং অনিয়মিত গায়ক হিসেবে সোলসসের সঙ্গে ছিলেন। সোলসের চারটি অ্যালবামে কাজ করেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। সুপার সোলস (১৯৮২), কলেজের করিডোরে (১৯৮৫), মানুষ মাটির কাছাকাছি (১৯৮৭) এবং ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট (১৯৮৮)।
আরও পড়ুন:
ওটিটি প্ল্যাটফরম আমার জন্য বেশ লাকি
সোলস ছেড়ে ১৯৯১ সালে এসআই টুটুল (কিবোর্ড), সাইদুল হাসান স্বপন (বেজ গিটার) এবং হাবিব আনোয়ার জয়কে (ড্রামস) সঙ্গে নিয়ে গঠন করেন লিটল রিভার ব্যান্ড, যা পরবর্তী সময়ে লাভ রানস ব্লাইন্ড। সংক্ষেপে যা এলআরবি নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯৯১ সালের এপ্রিলে এলআরবি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম কনসার্ট করে। ১৯৯২ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে প্রথম ডাবল অ্যালবাম- এলআরবি-১ এবং এলআরবি-২ প্রকাশ হয়। অ্যালবাম প্রকাশের পরই শ্রোতার হৃদয়ে এলআরবি নামটা গেঁথে যায়। এর পর একে একে প্রকাশ হতে থাকে অ্যালবাম। এলআরবির গান মানেই ছিল উন্মাদনা। তাদের তৃতীয় অ্যালবাম সুখ (১৯৯৩) ছিল অন্যতম ব্যবসাসফল অ্যালবাম। ব্যান্ডের বাইরেও আইয়ুব বাচ্চুর অসংখ্য গান পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। চলচ্চিত্রের গানেও তিনি ছিলেন সফল।
আরও পড়ুন:
ফের জুটি হলেন মম-শ্যামল