সাদিকা স্বর্ণার ভাবনায় ‘দ্য হিউম্যান ভয়েস’র মঞ্চায়ন

বিনোদন ডেস্ক
১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৪৩
শেয়ার :
সাদিকা স্বর্ণার ভাবনায় ‘দ্য হিউম্যান ভয়েস’র মঞ্চায়ন
ছবি : সংগৃহীত।

মিরপুর অ্যাভিনিউ ৫-এ অবস্থিত বিবলিওন বুকস্টোর ক্যাফেতে নিনাদ-এর প্রথম প্রযোজনা ফরাসি নাট্যকার জ কতো রচিত 'দ্য হিউম্যান ভয়েস' মঞ্চায়িত হতে যাচ্ছে।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) ও শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুইদিনে নাটকটির দুইটি প্রদর্শনী হবে। প্রদর্শনীর সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা।

এর আগে ৯ অক্টোবর থেকে ১১ অক্টোবর আলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার মিলনায়তনে নাটকটির প্রথম পাঁচটি মঞ্চায়ন হয় যা ইতিমধ্যে দর্শকনন্দিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, নাটকটির নির্মাণ সহযোগিতায় আলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

১৯৩০ সালে প্রথম মঞ্চস্থ হওয়া একাঙ্কিক ও একক চরিত্রের এই নাটকটি একজন নারীর গল্প, যিনি তার প্রেমিকের সাথে শেষবারের মতো টেলিফোনের কথা বলছেন। প্রেমিকটি পরদিনই অন্য একজনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছে, তাই প্রেমিকের সাথে এই শেষ টেলিফোন আলাপে ফুটে ওঠে নারীটির হৃদয়ভঙ্গ ও পরিত্যক্ত হওয়ার অস্ফুট আর্তনাদ এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার বেদনাকে সহ্য করতে না পেরে গভীর মানসিক অস্থিরতার চিত্ররূপ।

নাটকটি বাংলায় অনুবাদ ও রূপান্তর করেছেন প্রজ্ঞা তাসনুভা রূবাইয়াৎ, যিনি একইসাথে নির্দেশক হিসেবেও নাটকটির মঞ্চায়ন-ভাবনা ও সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রজ্ঞা ১৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে থিয়েটার, শিক্ষকতা, লেখালেখি ও অনুবাদ কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। 'দ্য হিউম্যান ভয়েস' এর নাট্যভাবনাকে মঞ্চে বাস্তবায়িত করে তুলছেন অভিনেত্রী সাদিকা স্বর্ণা, যিনি গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে মিডিয়ায় অভিনয় ও মডেলিংয়ের সাথে যুক্ত রয়েছেন।

সাদিকা স্বর্ণা ২০১০ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার আপ খেতাব অর্জন করেন। সেই সাথে থিয়েটার চর্চায় স্বর্ণার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, চারুকলা অনুষদ থেকে তার পড়াশোনা ও ব্যক্তিগত জীবন থেকে আহরিত আবেগীয় পরিপক্কতা 'দ্য হিউম্যান ভয়েস' নাটকে তার চরিত্রাভিনয়ে সংযোজন করেছে মনস্তত্ত্বের বোঝাপড়া ও মানব-অধ্যয়নের এক অনন্য মাত্রা।

এই নাটকের সাউন্ডস্কেপ ডিজাইনে আজমাইন ইসমাম, সিনোগ্রাফিক ডিজাইনে তানজি কুন, প্রজেকশন ভিজুয়াল নির্মাণে ধ্রুব দাস, কোরিগ্রাফিক কম্পোজিশনে অমিত চৌধুরী ও আলোক প্রক্ষেপণে মোখলেছুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেই সাথে, পোশাক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বিশেষ সহযোগিতামূলক ভূমিকা রেখেছেন বিশিষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনার আফসানা ফেরদৌসী।

তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভাবনা থেকে উৎসারিত পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন নাটকের সংলাপ, চরিত্রাভিনয় ও সার্বিক মঞ্চায়নে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তাছাড়া, নাটকটির দৃশ্যভাবনা ও সার্বিক পরিকল্পনায় সহকারী হিসেবে আছেন আতিক পিয়াল এবং নাটকের প্রচারণা সংক্রান্ত ভাবনা, পরিকল্পনা ও নকশা প্রণয়নে সহযোগিতা করেছেন সজিব হাজরা।

বাংলাদেশের গতানুগতিক নাট্যচর্চায় একক অভিনয়ের এই নাটকটি একটি বিরল ও সাহসী প্রয়াস হিসেবে নিশ্চিন্তভাবে দর্শকের মনে দাগ কাটবে বলে নিনাদ-এর বিশ্বাস। 'দ্য হিউম্যান ভয়েস' দর্শকদের জন্য এমন একটি অভিজ্ঞতা তৈরির প্রয়াস, যা একইসঙ্গে মনোমুগ্ধকর এবং ভাবনার উদ্রেককারী-যা সম্পর্কের টানাপোড়েনে একজন ব্যক্তির নীরবে লড়ে যাওয়া মানসিক সংগ্রামগুলো নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানাবে এবং মনস্তাত্ত্বিক ভাঙ্গনের সময়ে সচেতনতা ও যত্নের গুরুত্বকে তুলে ধরবে।

নিনাদের প্রত্যাশা, এই প্রযোজনাটি নাট্যরসিকদের জন্য কেবল নতুন এক শিল্প-অভিজ্ঞতাই হবে না, বরং মানুষের আন্তঃসম্পর্কে সহমর্মিতা, সচেতনতা এবং যত্নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সামাজিক আলোচনার অনুঘটক হয়ে উঠবে-যা একইসঙ্গে শিল্পচর্চাকে সমৃদ্ধ করবে এবং প্রযোজনাটির একটি সাংস্কৃতিক-সামাজিক মূল্য তৈরি হবে।

প্রসঙ্গত, নাটকটির প্রদর্শনী কেবলমাত্র ১৫ বছর ও তার উর্ধ্বে বয়সী দর্শকদের জন্য প্রযোজ্য। প্রদর্শনীর দিন নির্দিষ্ট কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাবে। ডিজাইনগত কারণে শো চলাকালীনসময়ে ক্যামেরা নিয়ে কোনোরকম মুভমেন্ট ও শব্দ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আমাদের সময়/কেইউ