ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর ভাতিজিকে হত্যা

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৬
শেয়ার :
ভাবিকে হত্যার ১০ বছর পর ভাতিজিকে হত্যা

বরগুনার তালতলী উপজেলায় ভাবি তানিয়া বেগমকে গলাকেটে হত্যার ১০ বছর পর এবার ৬ বছর বয়সী ভাতিজি নাহিল আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন চাচা হাবিব ওরফে হাবিল খান।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই হাবিলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিন রাত ১১টার দিকে নিহত শিশুর বাবা মো. দুলাল খান বাদী হয়ে তালতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত হাবিব ও মামলার বাদী বড় ভাই দুলাল খান একই বাড়িতে বসবাস করতেন। তবে হাবিব সার্বক্ষণিক নেশাগ্রস্থ থাকায় প্রায় সময়ই পরিবারের সদস্যদের গালিগালাজ করাসহ মারধর করতেন। ঘটনার দিন মঙ্গলবার দুপুরে শিশু নাহিল বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকানে রুটি কিনতে যায়। এসময় হঠাৎ হাবিব পেছন থেকে একটি লাঠি দিয়ে নাহিলের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন। শিশুটি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক বাবা দুলাল খান ও স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। নাহিলের আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকায় হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই চাচা হাবিবকে স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করেন। এসময় হাবিল একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, হাবিব ওরফে হাবিল খান এ ঘটনার আগে ২০১৫ সালে আগস্ট মাসে তার বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে গলাকেটে করে হত্যা করেন। ওই মামলায় শিশু আইনে তার ৯ বছর সাজা হয়। সাজা ভোগ শেষে ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। ভাবীকে হত্যার ১০ বছর পরে ঘাতক হাবিব তার বড় ভাই দুলাল খানের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের কন্যা নাহিলকে পিটিয়ে হত্যা করলেন।

শিশুর বাবা দুলাল খান কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘ও আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা করেছে সে। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর। শিশু আইনে ৯ বছর সাজা ভোগ করে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জামিনে মুক্তি পায়। জামিনে মুক্তি পাওয়ার দেড় বছরের মাথায় আমার শিশুকন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করল। আমার শিশুকন্যা কী অপরাধ করেছিল? আমি এর বিচার চাই।’

তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুটির মাথার ডান পাশে এবং বাঁ হাতের কনুইয়ে গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিক শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পারি, শিশুটি বরিশালে নেওয়ার পথেই মারা গেছে।’

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল বলেন, ‘হাবিব ওরফে হাবিল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ থানায় রাখা হয়েছে। বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে।’

আমাদের সময়/আরআর