১৫ শর্তে ৩ এয়ারলাইন্সকে হজযাত্রী বহনের অনুমোদন
চলতি হজ মৌসুমে হজযাত্রী পরিবহনে তিনটি এয়ারলাইন্সকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব দিয়েছে সরকার। হয়রানি ঠেকাতে এ বছর এয়ারলাইন্সগুলোকে ১৫টি শর্ত আরোপ করে হজযাত্রী পরিবহনের অনুমোদন দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়া তিনটি এয়ারলাইন্স হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স লিমিটেড এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স লিমিটেড। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৮ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সফিউজ্জামান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৪৪৭ হিজরি সনের পবিত্র হজ চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী বছর ২৬ মে অনুষ্ঠিত হবে এবং বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে গমন শুরু হবে ১৮ এপ্রিল থেকে। হজযাত্রী পরিবহনের বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের হজযাত্রীদের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর নির্ধারিত কোটার ভিত্তিতে প্রতিটি এয়ারলাইন্সে যাত্রীসংখ্যা বণ্টন করা হবে। এয়ারলাইন্সগুলোকে চুক্তি অনুযায়ী জেদ্দা ও মদিনা বিমানবন্দরের মাধ্যমে হজযাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজ অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়ায় শুধু ডেডিকেটেড ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহন করা যাবে এবং বিজনেস ক্লাসের জন্য বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। আর এয়ারলাইন্সগুলোকে সাত দিনের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া কোটার ফ্লাইট শিডিউলের খসড়া প্রস্তুত করে সৌদি আরবের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে এবং অনুলিপি মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। অনুমোদিত শিডিউল আগামী বছরের ৫ থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও হজ পোর্টালে প্রকাশ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, হজযাত্রীদের টিকিট ইস্যু, ই-হজ সিস্টেমে তথ্য প্রদান এবং এসএমএসের মাধ্যমে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানোর বিষয়েও বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হজযাত্রীর মৃত্যু বা ফ্লাইটে গমন ব্যর্থ হলে টিকিটের অর্থ ফেরত প্রদানের স্পষ্ট নিয়মও নির্ধারণ করা হয়।
এতে বলা হয়, কোনো এয়ারলাইন্স তার নির্ধারিত কোটার অতিরিক্ত যাত্রী গ্রহণ করতে পারবে না। এ নির্দেশনা অমান্য করলে তা হজ ব্যবস্থাপনায় অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। পাশাপাশি বিমানে হজের নিয়ম-কানুনসংবলিত ভিডিও প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বলেছে, ভিডিও প্রদর্শন না করা হলে তা হজ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সের অবহেলা হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ছাড়া এয়ারলাইন্সগুলোকে হজযাত্রী পরিবহনে বড় বিমান (২০০ থেকে ৮০০ যাত্রী পরিবহনে সক্ষম) ব্যবহার করতে হবে। বিমানে হজযাত্রীদের সঙ্গে বিনয়ী ব্যবহার, মানসম্মত খাবার ও সেবা প্রদান করতে হবে। সুষ্ঠু ও নিরাপদ হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে শর্তগুলো কঠোরভাবে পরিপালন করতে বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
জানা গেছে, চলতি বছরের হজ কোটা পূরণ হয়নি। ইতোমধ্যে হজ নিবন্ধনের সময়সীমা (১২ অক্টোবর) শেষ হয়েছে। কিন্তু মোট কোটা পূরণের এক-তৃতীয়াংশও নিবন্ধন হয়নি। হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন
অব বাংলাদেশ (হাব)-এর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।
এদিকে গত ১৩ অক্টোবর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব স্বাক্ষরিত অপর এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর হজ এজেন্সিগুলোকে নিজ প্রতিষ্ঠানের প্যাডে হজযাত্রীদের নাম-তালিকা করে আশকোনা হজ অফিসে জমা দিতে হবে। সরকার তালিকা যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
হজ ব্যবস্থাপনার ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৬৬৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩৫ হাজার ৪৩৩ জনসহ মোট ৩৯ হাজার ৯৬ জন হজযাত্রী নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এবার বাংলাদেশের মোট হজ কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন।
আমাদের সময়/ এইচও