মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় যা বললেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘এখন থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি অব্যাহত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনে একবারই সুযোগ এসেছে পুরনো দ্বন্দ্ব এবং তীব্র ঘৃণাকে পেছনে ফেলার। আমাদের ভবিষ্যৎ অতীত প্রজন্মের লড়াই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হলো দুই বছরের যুদ্ধের পর গাজা পুনর্নির্মাণ।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাতার, মিসর ও তুর্কি নেতাদের সঙ্গে ‘গাজা যুদ্ধবিরতি’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সেই সঙ্গে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির অঙ্গীকার করেন।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মি এবং চারজন মৃত জিম্মির মৃতদেহ ইসরায়েলে ফিরিয়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টা পরেই এটি করা হয়।
আরও পড়ুন:
রোগীর পেটে জীবন্ত মাছি!
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বুঝতে পারি যে স্থায়ী শান্তি এমন হবে যেখানে ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলি উভয়ই তাদের মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং তাদের মর্যাদা সমুন্নত রেখে উন্নতি করতে পারবে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আমরা অঙ্গীকার করছি- ভবিষ্যতের যেকোনো বিরোধের সমাধান হবে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে, শক্তি প্রয়োগ বা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের মাধ্যমে নয়। আমরা স্বীকার করছি যে, মধ্যপ্রাচ্য আর দীর্ঘ যুদ্ধ, অচলাবস্থায় আটকে থাকা আলোচনা, কিংবা অসম্পূর্ণ ও বাছাই করে বাস্তবায়িত চুক্তির বোঝা বহন করতে পারে না।’
শীর্ষ এ সম্মেলনের আয়োজক ছিল মিশর। দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের আহ্বান পুনর্নবীকরণের জন্য এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিলেন।
শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। পাশাপাশি কাতার, মিশর, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং তুরস্কের কর্মকর্তারাও এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আগে ‘শান্তি ২০২৫’ লেখা একটি সাইনবোর্ডের সামনে বিশ্ব নেতারা ছবি তুলতে পোজ দেন।
নথিতে স্বাক্ষর করার মাঝখানে ট্রাম্প বলেন, ‘এই পর্যায়ে আসতে ৩ হাজার বছর লেগেছে। বিশ্বাস করতে পারছেন? এবং এটিও টিকে থাকবে। এটিও টিকে থাকবে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘এই দিনটির জন্য এই অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে মানুষ কাজ করছে, সংগ্রাম করছে, আশা করছে এবং প্রার্থনা করছে। গত মাসে তারা এমন কিছু করেছে যা আমার মনে হয় সত্যিই অকল্পনীয় ছিল। কেউ ভাবেনি যে এটি ঘটতে পারে। আমরা যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছি তার মাধ্যমে, লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা অবশেষে সাড়া পেয়েছে।’
ট্রাম্প বলেছেন যে তার প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে, যদিও তিনি খুব বেশি বিস্তারিত কিছু বলেননি।
শার্ম এল-শেখে পৌঁছানোর পর আল-সিসির সঙ্গে বসে ট্রাম্প বলেন, ‘আচ্ছা, এটা শুরু হয়েছে। মানে, আমাদের বিবেচনায় এটা শুরু হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
২৫ জিম্মিকে মুক্তি দিল হামাস
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়ে গেছে এবং আপনি জানেন, পর্যায়গুলি একে অপরের সঙ্গে কিছুটা মিশে গেছে। আপনি গাজার দিকে তাকান, এটির অনেক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজন।’