যা রটে তাই কি ঘটে

নায়কদের পারিশ্রমিক

ফয়সাল আহমেদ
১৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৩
শেয়ার :
যা রটে তাই কি ঘটে

পছন্দের তারকাদের যে কোনো বিষয় নিয়ে ভক্তদের আগ্রহের কমতি থাকে না। কী করছেন? কোথায় আছেন? একটি কাজের জন্য কত টাকা পারিশ্রমিক নেন? এই পারিশ্রমিক নিয়ে ভক্তদের মধ্যেও চলে কথা চালাচালি! কেউ বলেন- আমার পছন্দের তারকা সেরা, তো কেউ বলেনÑ আমরাটা! হলিউড, বলিউডের তারকাদের পারিশ্রমিক নিয়ে তথ্য থাকলেও আমাদের দেশের তারকারা বিষয়গুলো এক প্রকার গোপন রাখতে ভালোবাসেন! তারপরও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় আনুমানিক একটা ধারণা।

‘এই ছবির জন্য আমি কোনো পারিশ্রমিক নেইনি! ওই ছবিতে আমি নামমাত্র পারিশ্রমিকে কাজ করেছি।’ এমন কথা নায়ক-নায়িকাদের মুখে প্রায়ই শোনা যায়। সেই খবরগুলোও প্রকাশ হয় গণমাধ্যমগুলোতে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো তারকা মুখ ফুটে বলেননিÑ ‘এই ছবিতে কাজের জন্য আমি পারিশ্রমিক বাবদ নিয়েছি এত লাখ টাকা!’ এর কারণ কী? বিষয়টি সবাই কোনো ধোঁয়াশার মধ্যে রাখতে পছন্দ করেন? দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। স্বাভাবিক কারণে তার পারিশ্রমিক হবে সবার থেকে বেশি। কিন্তু সেটা কত? কোটি টাকা! যদি কোটি টাকা হয় তাহলে তার সিনেমার বাজেট থাকে কত টাকা। সেই সিনেমার আয় করতে হয় কত কোটি? চলচ্চিত্রের এই বাজারে কোটি টাকা আয় করা কি সম্ভব হয়। এমন অনেক প্রশ্নই রাখা হয়েছিল চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের কাছে। উত্তরে পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো তথ্য নেই। তবে এটা বলা হয়েছে, ‘সিনেমার অবস্থা খুবই খারাপ। ঈদ ছাড়া কোনো সিনেমা দর্শক দেখে না। তাই সবাই এখন ঈদের জন্য সিনেমা নির্মাণ করছেন একটু ভালো বাজেট দিয়ে। আবার সব সিনেমাই যে ঈদের সময়ও হিট হয় তেমনও কিন্তু নয়। ফলে ঈদের সময়ও মাথায় হাত থাকে অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের। সেখানে কোটি টাকার পারিশ্রমিক নেওয়ার বিষয়টা একটু বাড়াবাড়ি বা প্রচরণার অংশ।’

জানা গেছে, পারিশ্রমিক ওঠানামা করে প্রযোজক-শিল্পী সম্পর্কের কারণে। অনেক সময় গল্প ভালো হলে কিংবা প্রযোজকের সঙ্গে সম্পর্কের খাতিরে নায়করা তাদের পারিশ্রমিকের চেয়েও অনেক কমে কাজ করে দেন। আবার ব্যবসা ভালো হলে নায়কদের পারিশ্রমিক চাহিদার থেকেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাকিব খান এখন পর্যন্ত কোনো সিনেমার জন্য কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেননি। সূত্র জানাচ্ছে, ‘প্রিয়তমা’ সিনেমায় ৩৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন শাকিব। এরপর সিনেমা তুমুল হিট করায় তার পরবর্তী সিনেমা ‘রাজকুমার’-এ তিনি নেন ৬৫ লাখ টাকা। ‘দরদ’ সিনেমায় নেন বরাবর ৭০ লাখ। তারপর শাকিব খান নাম লিখিয়েছেন রায়হান রাফীর ‘তুফান’ সিনেমায়। সিনেমাটির পোস্টার, ট্রেলার, টিজার, ‘কিরে তুফান ভয় পাইছিস’-এর মতো অনেক সংলাপ ও ‘দুষ্টু কোকিল’ গান তুমুল আলোচনায় আসে। সিনেমাটি দিয়ে তুমুলভাবে আলোচিত হন ঢালিউডের এই নায়ক। দেশের সব শ্রেণির দর্শক সিনেমাটি দেখতে ভিড় করেন। আয়েও এটি রেকর্ড গড়ে।

এই সিনেমার জন্য শাকিব খান পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন ৮০-৯০ লাখ টাকা, যা আলোচনায় আসে। তখন কোটি টাকা পারিশ্রমিক পাওয়া তালিকায় শাকিবের নাম কবে যুক্ত হবে, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। কেউ কেউ বলছিলেন, সিনেমাটির জন্য কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন শাকিব খান, তবে তথ্যটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। শোনা যাচ্ছে, আবু হায়াত মাহমুদ পরিচালিত ‘প্রিন্স’ সিনেমার জন্য তিন কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন শাকিব খান। এ প্রসঙ্গে সিনেমার পরিচালক আবু হায়াত বলেন, ‘এটা নিয়ে আমাদের প্রযোজক তিন কোটি পারিশ্রমিক দিচ্ছেন, এমন কোনো কথা বলেননি। তিনি শুধু এটাই বলেছেন যে, আমরা সম্মানজনক একটা অর্থ দিচ্ছি, যা শাকিব খানের বাজার অনুযায়ী চাহিদা। তবে সেটা কত, এটা আমাদের প্রকাশ করা ঠিক হবে না। গোপনীয় একটি বিষয়। তবে যা ছড়িয়েছে, সেটা যারা ছড়িয়ে তারাই জানেন কীভাবে তথ্য পেয়েছেন। আমরা সিনেমার পারিশ্রমিক নিয়ে সরাসরি কোনো অর্থের কথা বলিনি।’

নিজের প্রথম সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নিয়েছেন আফরান নিশো। সিনেমাটির জন্য তিনি পারিশ্রমিক নিয়েছেন ৩০ লাখ টাকা। শুধু তা-ই নয়, তার দ্বিতীয় সিনেমা ‘দাগি’তেও একই পারিশ্রমিক নিয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর। ‘জংলি’ সিনেমার জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেননি সিয়াম আহমেদ। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিনেমাটি থেকে এই নায়ক পারসেন্টেজ অর্থাৎ লভ্যাংশ নেবেন। তবে এই নায়ক সিনেমাপ্রতি ১৫-২০ লাখ টাকা নিয়ে থাকেন। ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘মিশন এক্সট্রিম’, ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার নায়ক আরিফিন শুভ সিনেমাপ্রতি নেন ১৫ লাখ টাকা। ঠিক একই পারিশ্রমিক নেন চিত্রনায়ক শরিফুল রাজও। ‘ওমর’ সিনেমার জন্য তিনি ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলেই খবর। চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী নেন ৫-১০ লাখের মধ্যে এবং সাইমন সাদিকের পারিশ্রমিক ৩ থেকে ৫ লাখের ঘরে। এ ছাড়া চিত্রনায়ক নিরব ও ইমন সিনেমাপ্রতি ৩-৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। এদিকে আদর আজাদ এবং জিয়াউল রোশান দুজনেই নেন সিনেমাপ্রতি ৫ লাখ টাকা।