অসুস্থ নাতনিকে দেখতে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন নানা-নানি
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক শিশুসহ আহত হয়েছে আরও ৩ জন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে গজারিয়ার আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ইউ-টার্নে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন বিল্লাল হোসেন (৬৫) ও আলনা বেগম (৫০)। তারা কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার দড়ি লুটেরচর গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। আহতরা হলেন তাদের ছেলের বউ অঞ্জনা (২৩), নাতনি আনিশা (৪) ও অটোরিকশা চালক অজ্ঞাত (৪০)।
এদিকে স্থানীয়রা বাসচালক কাউসার হোসেনকে (২৫) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
জানা যায়, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বাসিন্দা বিল্লাল হোসেনের মেয়ে রত্না আক্তারের বিয়ে হয় গজারিয়া উপজেলার আনারপুরা গ্রামে। সম্প্রতি রত্নার মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত হয়। তাকে দেখতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে পরিবার নিয়ে যাচ্ছিলেন বিল্লাল হোসেন। পথিমধ্যে অটোরিকশাটি আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইউ-টার্ন নেওয়ার সময় মতলব থেকে ঢাকাগামী মতলব পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সেটিকে ধাক্কা দিলে তা দুমড়ে মুচড়ে যায়।
এ সময় অটোরিকশা চালক, বিল্লাল ও তার স্ত্রী আলনাসহ ৫ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বিলাল, তার স্ত্রী আলনা এবং ছেলের বউ অঞ্জনাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন চিকিৎসক। পরে পথিমধ্যে আলনা ও বিল্লাল মারা যান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত চারজন রোগীকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে শিশু আনিশা ছাড়া বাকি তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নিহত আলনার চাচা নজরুল ইসলাম তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথে নানা ও নানী মারা গেছে। বাকিদের অবস্থাও ভালো নয়। অসুস্থ নাতনিকে দেখতে গিয়ে নিজেই লাশ হয়ে ফিরলেন।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দুর্ঘটনা কবলিত বাস এবং অটোরিকশাটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। বাসটির চালক কাউসার হোসেনকে আটক করে স্থানীয়রা আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
