বলাৎকারের পর স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধে হত্যা, একজন গ্রেপ্তার

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
১২ অক্টোবর ২০২৫, ২০:১৫
শেয়ার :
বলাৎকারের পর স্কুলছাত্রকে শ্বাসরোধে হত্যা, একজন গ্রেপ্তার

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্কুলছাত্র হুজাইফা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে মামলা রুজুর তিন ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার এবং হত্যার রহস্য উন্মোচন করে। 

আজ রোববার সন্ধ্যায় শ্রীপুর থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালিয়াকৈর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মেরাজুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার সোহাগ মিয়া (১৯) উপজেলার গোসিয়গা ইউনিয়নের চাওবন গ্রামের মৃত হরুম মেম্বারের ছেলে। 

সহকারী পুলিশ সুপার মেরাজুল ইসলাম জানান, গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে শ্রীপুর থানার ওসির কাছে ফোন আসে উপজেলার চাওবন গ্রামের বনের ভেতর এক শিশুর মরদেহ পড়ে আছে। পরে ওসি আব্দুল বারিকসহ তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে রাতেই থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় তারা ওই এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালান। একপর্যায়ে সন্দেহভাজন যুবক মো. সোহাগ মিয়াকে (১৯) আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহাগ হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে। তাকে রোববার আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানেও সোহাগ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। 

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সোহাগের দেওয়া তথ্য মতে বয়সের ব্যবধান থাকলেও হুজাইফার সঙ্গে সোহাগ খেলাধুলা করত। এর আগেও সোহাগ চিপস, জুসের প্রলোভনে হুজাইফাকে দুইবার বলৎকার করেছে। ঘটনার দিন (শনিবার) সকাল দশটার দিকে সোহাগ হুজাইফাকে ফুসিলিয়ে চাওবন গ্রামের শিরার মার টেক নামক গভীর গজারী বনের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বলৎকার করে সোহাগ। পরে ১০০ টাকা দিয়ে চিপস্ ও পেপসি আনতে পাঠায়।

সহকারী পুলিশ সুপার জানান, সোহাগ বনের ভেতর বসে থাকে। কিছু সময় পর ভিকটিম কিছু না কিনে খালি হাতে ফিরে আসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ভিকটিমকে মারধর করে। এ সময় ভিকটিম বলৎকারের বিষয়ে বলে দিবে জানালে সোহাগ তাকে গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে সোহাগ বনে লাশ ফেলে বাড়িতে গিয়ে গোসল করে। ভিকটিমের মা সোহাগের বাড়ি গিয়ে ছেলেকে খুঁজতে থাকে। সোহাগও ভিকটিমের মায়ের সঙ্গে তাকে খুঁজতে বের হয়। বিকেল তিনটার দিকে বনের ভেতর গিয়ে হুজাইফা পড়ে আছে বলে চিৎকার করে সোহাগ। সন্ধ্যায় পুলিশ যখন মরদেহ উদ্ধার করতে যায় তখন সোহাগ পুলিশকে দেখায় কিভাবে ভিকটিম পড়েছিল।

এর আগে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের চাওবন গ্রামের গজারী বন থেকে স্কুলছাত্র হুজাইফার (৯) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ভিকটিম চাওবন গ্রামের মধ্য পাড়ার এলাকার মো. হারুনুর রশিদের ছেলে। হুজাইফা চাওবন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। শনিবার সকাল দশটার দিকে গরু চড়াতে বাবার সঙ্গে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সে।