আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ভাঙচুর-লুটপাট, নারীসহ আহত ১০
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘরে হামলা এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় নারীসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর ও বালুয়াকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ৭ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নুরজাহান (৭০), রিনা (৪০) ও মনিকা (৩০), শিউলি (৩৫), কামরুন নাহার (৪০), পিংকি (৩১), ছফিরুন (৫৬)।
আহত নুরজাহান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে আমরা সবাই ঘুমিয়ে পড়ি। রাত সাড়ে তিনটার দিকে ২০-২৫জন সন্ত্রাসী আমাদের উঠোনে এসে হৈ চৈ করতে থাকলে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে হামলাকারীদের কয়েকজন দরজা ভেঙে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। পরবর্তীতে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।’
আহত রিনা বেগম বলেন, ‘হামলাকারীদের মধ্যে কুদ্দুস, সাব্বির রাঢ়ী ও জিহাদ রাঢ়ীকে চিনতে পেরেছি আমি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে তারা আমাকে লক্ষ্য করে কোপ দেয়। আমি সরে গেলে পরে আমার কপালে লাগে। আমাদের বাড়ি ঘরের ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে।’
গজারিয়া উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাফিস আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের হাসপাতালে তিনজন রোগী আসে। তাদের সবাইকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে রিনার কপালে জখম রয়েছে। নুরজাহান বেগমের বাম হাত এবং বাম পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিপক্ষের জিয়াউল জিতু রাঢ়ী বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। আমার কোনো সমর্থক এ কাজের সঙ্গে জড়িত নয়।’
তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নৌ ডাকাত-নয়ন পিয়াস পালিয়ে যাবার পরপর স্থানীয় লোকজন একজোট হয়ে তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। তারা এখন এলাকায় ফিরতে চায় সেজন্য নাটক সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।’
প্রসঙ্গত, গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নে নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে চলতি বছরের গত ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। ক্যাম্প চালু হবার তিন দিন পর অর্থাৎ ২৫ আগস্ট অস্থায়ী ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা।
এ ঘটনায় মামলা দায়ের এর পর থেকে নয়ন পিয়াস গ্রুপের লোকজন আত্মগোপনে চলে গেলেও তাদের প্রতিপক্ষ জিয়াউল হক জিতুর রাঢ়ী সম্প্রতি এলাকায় ফিরে আধিপত্য বিস্তারিত চেষ্টা করছে। জিতু রাঢ়ীর সমর্থকদের হুমকিতে নয়ন-পিয়াসের গ্রুপের অন্তত শতাধিক মানুষ গ্রাম ছাড়া বলে জানা গেছে।