মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম, শিক্ষক পলাতক
কবুতর চুরির অভিযোগে এক মাদ্রাসাছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে রাতভর মাদ্রাসায় আটক রাখার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর আজ বুধবার সকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক জুবায়ের আহমেদ আজ বুধবার সকাল থেকে পলাতক রয়েছেন। আহত জুনায়েদ আহমেদ (১৩) ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। জুনায়েদ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পার গোয়াল গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে।
জুনায়েদের চাচা আয়নাল হক বলেন, ‘আমার ভাই এক বছর দুই মাস আগে মারা গেছেন। এরপর থেকে জুনায়েদকে অনেক কষ্টে লালন পালন করছি। তার লেখাপড়ার কিছু খরচ আমাকেও দেওয়া লাগে। গত প্রায় সাত বছর যাবত ওই মাদ্রাসায় জুনায়েদ লেখাপড়া করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে হঠাৎ স্থানীয় একজন ফোনে জানায়, কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে হুজুর জুনায়েদকে বেধড়ক পিটিয়েছে। এ খবর শুনে সকাল সকাল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখি ছেলেটার পিঠে, উরুতে আর হাতে জখমের দাগ। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি।’
জুনায়েদের মা রিমা খাতুন বলেন, ‘কবুতর চুরির অপবাদ দিয়ে যেভাবে আমার ছেলেকে পিটিয়েছে, তা কোনোভাবেই সহ্য করা যায় না। আমার ছেলের পিঠে, পায়ে, উরুতে ও হাতের একটি আঙ্গুলে জখমসহ শরীরের প্রায় ২৫ জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমি অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ফজলুল উলুম কওমি মাদ্রাসার সুপর মাওলানা মুফতি সাইদুর রহমান বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় বেত ব্যবহার নিষিদ্ধ। মাদ্রাসা কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাদ্রাসার সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান সেন্টু জানান, তাৎক্ষণিক জানতে পেরে ওই শিক্ষকের ক্লাস নেওয়া স্থগিত করেছি। আজ রাতে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল আজিজ জানান, বেত্রাঘাতে আহত এক শিশুকে তার পরিবার হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও ক্ষতর চিহ্ন রয়েছে।
গাংনী থানার ইন্সপেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’