সুন্দরগঞ্জে আরও ৬ জনের শরীরে অ্যানথ্র্যাক্স শনাক্ত

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২২:৪২
শেয়ার :
সুন্দরগঞ্জে আরও ৬ জনের শরীরে অ্যানথ্র্যাক্স শনাক্ত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নতুন করে আরও ছয়জনের শরীরে আ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার তাদের শরীরে আ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। এ নিয়ে উপজেলায় এ পর্যন্ত ২২ জনের শরীরে রোগটি শনাক্ত হয়েছে। 

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর হতে আজ পর্যন্ত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়ে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তারা হলেন মধ্যে বেলকা গ্রামের সামিউল ইসলাম, সাহাদৎ হোসেন, সবুজ মিয়া, বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আজিজল হক, পশ্চিম বেলকা গ্রামের ভূট্ট মিয়া, আতিকুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, বেলকা গ্রামের মোজাহার আলী, মোজাফ্ফর হোসেন, খতিব মিয়া, ফরিদুল হক, রুজিনা বেগম, কিসামত সদর গ্রামের মোজা মিয়া, মাহবুর রহমান, শাফিকুল ইসলাম, স্বাধীন মিয়া, সকিনা বেগম, তাইজল মিয়া, শিশু ছায়ফান বেগম, আফরিন বেগম, ছালদিয়া ইসলাম, ও রইসুল মিয়া। এদের মধ্যে রুজিনা বেগম রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আজ বেলকার কিশামত সদর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আক্রান্তদের কারও এক হাতে, কারও দুই হাতেই ফোসকা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু মোজাফফর আলীর বাম চোখ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে।  

তিনি বলেন, ‘গত ২৭ সেপ্টেম্বর অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত জবাই করা গরুর মাংস কাটাকাটিতে অংশ নিয়েছিলাম। এর দুইদিন পর বাম হাতে ও বাম চোখে ফোসকা দেখা দেয়। এ অবস্থায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখানে ভর্তি হতে চাইলে, চিকিৎসক ওষুধ লিখে দিয়ে বিদায় করে দেন। কোনো ওষুধ দেয় নাই। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে এনে খাচ্ছি এবং বাড়িতে আছি। ’ 

মোজাফফর আলী বলেন, ‘এরপর গত শুক্রবার রংপুর থেকে গাইবান্ধার একটি ক্লিনিকে আসা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনজুরুল করিমের কাছে যাই। বর্তমানে তার দেওয়া চিকিৎসা চলছে। এখন একটু সুস্থ।’

 একই কথা বলেন ওই গ্রামের নুরুন্নবী মিয়া ও নুর নাহার বেগম। তারা আরও বলেন, তাদের পক্ষে এত দামি ওষুধ কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওষুধের দাম অনুয়ায়ী ২০ দিনের জন্য প্রায় ৩ হাজার টাকার ওষুধ লাগবে। সরকারি ভাবে ওষুধ সরবরাহের দাবি তাদের।

 উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ গুরুত্বর ছিলেন না। বেশিভাগ রোগী রাতে এসেছিলেন, সে কারণে তাদেরকে ওষুধ দেওয়া সম্ভব হয়নি। 

তিনি বলেন, গত দুই দিনে (সোমবার ও মঙ্গলবার) নতুন করে আরও ৬ জন চিকিৎসা নিয়ে গেছেন। এ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জনের চিকিৎসা দেওয়া হলো। রোগীদেরকে ১০ দিনের অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দেওয়া হচ্ছে। অন্য কোনো সমস্যা না থাকলে ১৫ হতে ২০ দিনের মধ্যে সুস্থ হওয়ার কথা। অ্যানথ্রাক্সের চিকিৎসায় উপজেলায় একটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। 

 উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দে বলেন, গরু-ছাগলকে অ্যানথ্রাক্স রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সচেতনতায় উঠান বৈঠক, মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এটি কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। পরীক্ষা করে দুইটি গরুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের রোগের জীবানু পাওয়া গেছে। ছয়টি মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছে।