স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে হাসপাতালে যোগদানে বাধার অভিযোগ
সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা সেবা। অভিযোগ উঠেছে, সিন্ডিকেটের সদস্যদের পছন্দ না হওয়ায় সদ্য পদায়ন হওয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোছা. শামসুন্নাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মব সৃষ্টি করে কর্মস্থলে যোগদানে বাধা দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে নতুন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহার কর্মস্থলে যোগ দিতে আসেন। এ সময় ডা. এম এ হালিম লাবলুর নেতৃত্বে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ এবং বহিরাগতরা মিলে মব সৃষ্টি করে ব্যারিকেড দিয়ে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে দেখা যায়।
অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ডাক্তার ও কর্মচারীদের স্টাফসহ কয়েকশ স্থানীয় জনতাকে নতুন টিএইচওকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী পাল্টাপাল্টি স্লোগানের পরে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল এসে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহারকে নিরাপদে হাসপাতাল থেকে বাসায় পৌঁছে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, বিধি লঙ্ঘন করে একটানা ছয় বছর একই কর্মস্থলে থেকে সক্রিয় সিন্ডিকেট চক্র গড়ে তুলেছেন মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. এম এ হালিম লাবলু। নিজ এলাকায় কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় এই সিন্ডিকেট দিয়ে পুরো হাসপাতালটি অলিখিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ডা. লাভলু। কর্মকর্তা মোছা. শামসুন্নাহারের পদায়নের সংবাদ পেয়ে ‘কাল্পনিক’ অভিযোগ তুলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আন্দোলন শুরু করে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ করে দেন তিনি। এ ঘটনায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. লাবলু বলেন, ‘হাসপাতালের চার্জে বর্তমানে আমি আছি। উনি (শামসুন্নাহার) আগের কর্মস্থলে দুর্নীতি করেছেন। উনি যোগদান করলে এই হাসপাতালে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিষ্ঠা পাবে। তার বিরুদ্ধে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বপ্রোণিদিতভাবে আন্দোলন করছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামসুন্নাহার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন। আগের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেবুল হাসান তার সিন্ডিকেট দিয়ে আমাকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্তা করছে।’
রংপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, ‘আমি ঢাকায় মিটিংয়ে আছি। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আন্দোলনের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।’