নুরাল পাগলের দরবারের চোরাই মালামালসহ যুবক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও রাসেল মোল্যা হত্যা মামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রিপন রায় (২৯) নামে এক যুবকে চোরাই মালামালসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রবিবার গোয়ালন্দ ঘাট পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তারক কাছ থেকে ৩টি কাঠের খাটের চড়াট পাওয়া গেছে। আজ সোমবার দুপুরে তাকে রাজবাড়ী আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার রিপন গোয়ালন্দ উপজেলার ক্ষুদিরাম সরকার পাড়া পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড গ্রামের মৃত দূর্গা রায়ের ছেলে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘নুরাল পাগলের দরবার থেকে চুরি, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মারামারি ও মরদেহ পোড়ানো হয়। সেই অভিযোগের মামলায় ফুটেজ শনাক্ত করে রিপন রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পুলিশের ওপর হামলা মামলায় ১৬জন ও দরবারে হওয়া ঘটনার মামলায় ১২ জনসহ মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৮জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’
জানা গেছে, নুরাল পাগলের ভক্ত নিহত রাসেল মোল্লাকে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো, ক্ষতিসাধন, চুরি, জখমের অভিযোগে নিহতের বাবা আমজাদ মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৩৫০০-৪০০০ জনকে আসামি করে গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে গোয়ালন্দ থানায় মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা সাড়ে তিন হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ সমাবেশ করে ইমান আক্বিদা রক্ষা কমিটি। বিক্ষোভ থেকে হামলা চালানো হয় নুরাল পাগলার দরবার শরীফে। পাল্টা আক্রমণ করেন নুরাল পাগলের ভক্তরা। সংঘর্ষে রাসেল মোল্যা নামে নুরাল পাগলের ভক্ত নিহত ও শতাধিক মানুষ আহত হন। পরে নুরাল পাগলের দরবার শরীফে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে হামলা চালানো হয় পুলিশের ওপর, ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।
গত ২৩ আগস্ট মারা যান নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা। এরপর তার ভক্তরা দরবারের ভেতরে তাকে কবর দেন এবং কবরের ওপরে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়, যা সৌদি আরবের মক্কায় অবস্থিত মুসলমানদের কেবলা কাবা শরীফে মতো দেখতে। তাই এ নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর ইমান আক্বিদা রক্ষা কমিটির ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পরে তারা দরবারে হামলা চালান এবং দরবারের ভেতরে থাকা নুরাল পাগলের কবর ভেঙে দেন। সেই সঙ্গে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করে তা পুড়িয়েও দেন।