তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, রেড অ্যালার্ট জারি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
০৫ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৩৮
শেয়ার :
তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, রেড অ্যালার্ট জারি

টানা ৩ দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ রবিবার রাত ৯টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৪২ মিটার, যা বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটারের ওপরে। 

এ অবস্থায় লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রেড অ্যালার্ট জারি করে নদীপাড়ের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে মাইকিং করছে।

স্থানীয়রা জানান, গত তিন দিনের ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি ক্রমেই বাড়ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাত্র নয় ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ৮০ সেন্টিমিটার। এতে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, অনেক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।

পানিতে ডুবে গেছে মাছের খামার, রোপা আমন ধান ও বিভিন্ন সবজির খেত। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাটও পানির নিচে তলিয়ে গেছে, ফলে স্থানীয়দের অনেকেই এখন নৌকায় চলাচল করছেন।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে আগামী ১২ ঘণ্টায় তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গোবর্দ্ধন গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ধানের খেত পানির নিচে।’

ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টের ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘তিস্তার পানি বর্তমানে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।’

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার জানান, পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রোপা আমন, চিনাবাদাম ও শাকসবজির চাষ চলছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।