সুন্দরগঞ্জে অ্যানথ্রাক্সে একদিনে ১০ গরুর মৃত্যু, অর্ধশতাধিক আক্রান্ত
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপকহারে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও আজ শনিবার একদিনের ব্যবধানে ১০ গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেই সাথে আক্রান্ত হয়েছে অর্ধশতাধিক।
সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ হতে মাইকিং ও উঠান বৈঠক অব্যাহত রয়েছে। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মৃত পশুর সংখ্যা কম রয়েছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে মাইকিং করা হচ্ছে। সেই সাথে উঠানবৈঠক অব্যাহত রয়েছে।
প্রচারণায় বলা হচ্ছে, অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত পশু পরিচর্যা করলে বা সেই পশু জবাই করে মাংস কাটাকাটি করলে মানুষের মাঝেও অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে কারণে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত গবাদি পশু কোনো অবস্থাতেই জবাই করা যাবে না। হ্যান্ড গ্লাভস পড়ে আক্রান্ত পশুর পরিচর্যা করতে হবে এবং মৃত্যুর পরেই পশুকে তাৎক্ষণিকভাবে মাটির নিচে পুতে রাখতে হবে।
বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর রহমান মন্টু বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও শনিবার ওই গ্রামের খয়বর হোসেন, বাবুজার মিয়া ও চান্দ মিয়ার ৩টি গরু মারা গেছে। সেই সাথে তাদের আরও চারটি গরু গুরুত¦র অসুস্থ। যেকোনো সময় মারা যেতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই গ্রামে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে আক্রান্ত মোজা মিয়া, মোজাফ্ফর মিয়া, মাহবুর রহমান, শহিদুল ইসলামসহ ১১ জন মানুষের অবস্থা এখন আগের চেয়ে একটু ভাল। এদের মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ বদিরুল আহসান সেলিম বলেন, ‘গবাদি পশুর মাঝে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব দেখা দেওয়ায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ হতে শনিবার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উঠান বৈঠক করা হয়েছে।’
উপজেলা প্রাণি অফিসার বিল্পব কুমার দে বলেন, ‘উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে আক্রান্ত এলাকায় ভ্যাকসিন দেয়া অব্যাহত রয়েছে। সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে প্রচার-প্রচারণা, মাইকিং,লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক, উপজেলা প্রশাসন, গণমাধ্যমকর্মী, সুশিল সমাজের প্রতিনিধি,ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় জবাই করাসহ অন্তত ১০টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। অর্ধশতাধিক আক্রান্ত হয়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার দিবাকর বসাক বলেন, ‘উপজেলার বেলকা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার দশজন অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রার্দুভাব নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। মনিটরিং টিম সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে কাজ করছেন।’