মেসে মিল নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৪
কুষ্টিয়ার একটি মেসে খাবারের মিল সংখ্যা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মেস মালিকসহ অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই রোডের একটি ছাত্রদের মেসে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব (২০২১-২২) ও মনিরুল ইসলাম রোহান (২০১৯-২০), এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগের শিক্ষার্থী নয়ন (২০২১-২২) এবং মেস মালিক তুহিন। এদের মধ্যে সজিব গুরুতর আহত হয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একই মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা মাসে ৪৫টি খাবারের হিসাব নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু পূজার ছুটিতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বাড়ি চলে যাওয়ায় মিল সংখ্যা ৪৫ থেকে ৪০ করার প্রস্তাব ওঠে। এ বিষয়ে মেসেঞ্জারে ভোটে অধিকাংশ সদস্য ৪০ মিলের পক্ষে মত দিলেও রোহান তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে রোহান ও সজিবের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
পরবর্তীতে সজিব ও নয়ন বিষয়টি মীমাংসার জন্য রোহানের রুমে গেলে পুনরায় বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এতে সজিব গুরুতর আহত হয় এবং পরে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
অভিযোগ করে আহত শিক্ষার্থী সজিব বলেন, ‘রাতে মিলের বিষয়ে আলোচনা চলাকালীন রোহান ভাই হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালিগালাজ ও মারধর করেন। আমি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি এবং লিখিত অভিযোগ দেব।’
অন্যদিকে, পাল্টা অভিযোগে রোহান বলেন, ‘সজিব ও তার সহপাঠীরা রাত ৯টার দিকে হিসাব-নিকাশ নিয়ে আমাকে ডাকে। পরে তর্ক-বিতর্ক মিটিয়ে সবাই চলে যায়। কিছুক্ষণ পর সজিব ২০-২৫ জন বহিরাগত নিয়ে এসে আমাকে ও মেস মালিককে মারধর করে এবং কুষ্টিয়া ছাড়ার হুমকি দেয়। আমি সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’
মেস মালিক তুহিন বলেন, ‘প্রথমে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। পরে শুনে নিচে এসে দেখি দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি চলছে। আমি থামাতে গিয়ে নিজেও আহত হই।’
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রাতে আহত অবস্থায় সজিব ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। তার মুখমণ্ডল ও চোখে আঘাত রয়েছে। তারা সিটি স্ক্যান ও এক্সরে করার পরামর্শ দিয়েছেন।
আজ শনিবার সকালে হাসপাতালে যান ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার সরকার। তিনি বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনে হাসপাতালে এসেছি। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পর রাতেই হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীর খোঁজ নিয়েছি। চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি, পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’