এমন মুহূর্ত কী আর আসবে: প্রেস সচিব
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধিবেশন যোগদানের স্মৃতি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘এমন মুহূর্ত কী আর আসবে, কবে আবার আমরা এমন দৃশ্য দেখব যে, এক বাংলাদেশি নেতাকে ঘিরে বিশ্বের বড় বড় নেতারা ভিড় জমাচ্ছেন, সেলফি তুলতে চাইছেন, হাত মেলাতে চাইছেন, বা তার সাম্প্রতিক কাজের খোঁজ নিচ্ছেন?’
আজ শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অধিবেশনে যোগদানের স্মৃতি তুলে ধরেন শফিকুল আলম। নিচে তার পোস্টটি তুলে ধরা হলো:
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন সদ্য শেষ হলো। হয়তো এটিই ছিল শেষবারের মতো, যখন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে বিশ্বের নেতাদের এই বার্ষিক সমাবেশে অংশ নিলেন। এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক থেকে আরেক বৈঠকে তাকে অনুসরণ করতে গিয়ে আমরা এমন কিছু প্রত্যক্ষ করেছি, যা কোনো বাংলাদেশির জন্য বিরল বটে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী কূটনৈতিক করিডরে প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বনেতার কাছেই তিনি অভ্যর্থনা ও আলিঙ্গন পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
অধ্যাপক ইউনূসের জন্য অবশ্য এটি নতুন কিছু নয়। তিনি বহুবার এই করিডরে হেঁটেছেন, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান ও পরিবর্তনসাধকদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করেছেন। ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক হিসেবে জাতিসংঘে তাকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তাকে উল্লেখ, সম্মানিত ও অধ্যয়ন করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি পরিবেশগত সংকট, বৈষম্য ও দারিদ্র্য মোকাবিলায়ও প্রধান কণ্ঠে পরিণত হয়েছেন। তার ‘তিন শূন্য’ প্রচারণা শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য কার্বন নিঃসরণ-হাজারো মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে কর্মী, সিইও থেকে শুরু করে দাতব্য উদ্যোক্তা পর্যন্ত।
কিন্তু তার শেষ দুই সফরে আবহটা ভিন্ন ছিল। এবার তিনি শুধু নোবেলজয়ী বা উন্নয়ন চিন্তাবিদ ছিলেন না, তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আশা ও পুনর্নবীকরণের প্রতীক। প্রথমবারের মতো অনেক বাংলাদেশি প্রত্যক্ষ করলেন, কেবল তার চিন্তাধারার জন্য নয় বরং তিনি এখন যা প্রতিনিধিত্ব করছেন তার জন্যও তাকে কীভাবে বিশ্ব মঞ্চে স্বাগত ও সম্মানিত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
আবার কী এমন মুহূর্ত আসবে, যখন বিশ্বনেতারা তার সঙ্গে কথা বলার জন্য লাইনে দাঁড়াবেন, অপেক্ষা করবেন ধৈর্য ধরে, যতক্ষণ না তিনি অন্য এক মহাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আলাপ শেষ করেন? আবার কি এমন সময় আসবে, যখন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ীরা তাদের সবচেয়ে জরুরি সামাজিক চ্যালেঞ্জ সমাধানের পরামর্শ চাইবেন তার কাছে?
আমাদের জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার মাস পর। নির্বাচনের পর অধ্যাপক ইউনূস হয়তো আবার তার আগের জীবনে ফিরে যাবেন। আর আমি যখন গত কয়েক মাসের কথা ভাবি, তখন এখন থেকেই এক ধরনের নস্টালজিয়া অনুভব করি।