শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আহমদ রফিকের মরদেহ হাসপাতালে হস্তান্তর
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভাষা সংগ্রামী আহমদ রফিকের মরদেহ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে শোক মিছিল সহকারে শাহবাগের ইব্রাহিম কার্ডিয়াক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তার মরদেহ এ হাসপাতালে দান করে গেছেন।
এর আগে আজ বেলা ১১টায় শহিদ মিনারে নেওয়া হয় আহমদ রফিকের মরদেহ। সেখানে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ছাড়া নানা সংগঠনের পক্ষ থেকেও তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে আহমদ রফিকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অতিরিক্ত সচিব আবুল ফয়েজ আলাউদ্দিন খাঁ। এ ছাড়া অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপির পক্ষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, শিল্পকলা একাডেমির ডিজি রেজাউদ্দিন স্টালিন, আর্কাইভ ও গ্রন্থাগারের ডিজি খন্দকার জহিরুল ইসলাম, গণফোরামের সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, লেখক জয়নাল আবেদিন, মুক্তিযুদ্ধ সংসদের নঈম জাহাঙ্গীর, ভাষা মতিনের কন্যা মালিহা শোভন, অন্য প্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ষড় ঋতু উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক এহসান মাহমুদ ও সদস্যসচিব দ্বীপান্ত রায়হান, গণফ্রন্ট্রের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস প্রমুখ তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আহমদ রফিকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইন্সটিটিউট, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, একুশে চেতনা পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র; জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমি, কপিরাইট অফিস, লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট, গণমুক্তি ইউনিয়ন, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, মহিলা পরিষদ জাতীয় গণফ্রন্ট, মনি সিং-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট, ঐক্য ন্যাপ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ফোরাম, পল্লী শিশু ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, উদীচীর আরেক গ্রুপ (অমিত, সেলিম), বাংলাদেশ জাসদসহ নানা সংগঠন।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি বারডেম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বুধবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?
গবেষক, বহুমাত্রিক লেখক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। জীবনভর তিনি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশ পদক পেয়েছেন। এছাড়া, কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে 'রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য' উপাধিতে দিয়েছে।
আহমদ রফিকের জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তার স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তার লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের একুশের বইমেলায় দুটি বই সময় প্রকাশন থেকে ‘ভারত-পাকিস্তান বাংলাদেশ কথা’, এই সময় পাবলিকেশনস থেকে প্রবন্ধগ্রন্থ ‘শিল্প-সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য’ প্রকাশিত হয়।