যৌনকর্মীকে হামলার দায়ে দুই ভারতীয়ের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫১
শেয়ার :
যৌনকর্মীকে হামলার দায়ে দুই ভারতীয়ের কারাদণ্ড

সিঙ্গাপুরে ছুটি কাটাতে গিয়ে হোটেল কক্ষে দুই যৌনকর্মীর কাছ থেকে লুট ও হামলার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ভারতের দুই যুবক। শুক্রবার আদালত তাদের প্রত্যেককে পাঁচ বছর এক মাসের কারাদণ্ড ও ১২ বেত্রাঘাতের সাজা দিয়েছেন।

অভিযুক্তরা হলেন ২৩ বছর বয়সী আরোক্কিয়াসামি ডেইসন ও ২৭ বছর বয়সী রাজেন্দ্রন মাইয়িলারাসান। তারা স্বেচ্ছায় আঘাত করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের লুটের অপরাধে দোষ স্বীকার করেছেন বলে জানায় দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।

আদালতে বলা হয়, গত ২৪ এপ্রিল তারা ভারতে থেকে সিঙ্গাপুরে ঘুরতে আসেন। দুদিন পর লিটল ইন্ডিয়া এলাকায় হাঁটার সময় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের কাছে এসে যৌনসেবা দেওয়ার প্রস্তাব দেন এবং দুই নারীর যোগাযোগ নম্বর দিয়ে চলে যান।

পরে আরোক্কিয়া রাজেন্দ্রনকে জানান, তাদের টাকার দরকার, তাই ওই নারীদের ডেকে হোটেল কক্ষে ডাকাতি করা যেতে পারে। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা এক নারীকে হোটেল কক্ষে ডাকার ব্যবস্থা করে।

হোটেল কক্ষে প্রবেশের পরই তারা প্রথম ভুক্তভোগীর হাত-পা কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং তাকে থাপ্পড় মারে। এরপর তার কাছ থেকে গয়না, ২ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার নগদ অর্থ, পাসপোর্ট ও ব্যাংক কার্ড লুট করে নেয়।

সেই রাতেই ১১টার দিকে তারা আরেক নারীকে অন্য এক হোটেলে ডাকার পরিকল্পনা করে। ওই নারী পৌঁছানোর পর তারা তাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় এবং রাজেন্দ্রন তার মুখ চেপে ধরে, যাতে চিৎকার করতে না পারে।

তারা দ্বিতীয় নারীর কাছ থেকে ৮০০ সিঙ্গাপুর ডলার নগদ অর্থ, দুটি মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয় এবং হুমকি দেয় যেন তারা ফিরে আসা পর্যন্ত কক্ষের বাইরে না যায়।

আরোক্কিয়াসামি ও রাজেন্দ্রনের এই অপরাধ ফাঁস হয় যখন দ্বিতীয় ভুক্তভোগী পরদিন এক ব্যক্তির কাছে বিষয়টি জানায়। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

শাস্তি কমানোর অনুরোধে আদালতে আইনজীবী ছাড়া হাজির হয়ে তারা বিচারকের কাছে দয়া প্রার্থনা করেন।

দোভাষীর মাধ্যমে আরোক্কিয়া বলেন, ‘গত বছর আমার বাবা মারা গেছেন। আমার তিন বোন আছে, তাদের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়েছে। আমাদের কোনো টাকা নেই। সেই কারণেই আমরা এটা করেছি। রাজেন্দ্রন যোগ করেন, ‘আমার স্ত্রী আর সন্তান ভারতে একা থাকে এবং তারা আর্থিক কষ্টে আছে।

সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, ডাকাতির সময় ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করলে পাঁচ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ন্যূনতম ১২ বেত্রাঘাতের শাস্তি দেওয়া হতে পারে।