গাইবান্ধায় ৭ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ
গাইবান্ধায় ৭ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে তারা চিকিৎসা নিতে আসলে এই বিষয়টি প্রকাশ পায়।
এসময় ক্লিনিকের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনজুরুল করিম ৭ জনকে প্রাথমিক ব্যবস্থাপত্র দিয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। তবে রাত ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে কারও ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, তাদের সবার বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ মনজুরুল অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরুর মাংস খেলে সাধারণত এ রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসায় রোগটি সেরে যায়।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন রকিবুজ্জামান জানান, কয়েকদিন আগে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত গ্রামে অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গরু জবাই করা হয়। ওই গরুর মাংস কাটাকাটি করায় কিসামত গ্রামের কয়েকজন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন। তারা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
রকিবুজ্জামান বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তের লক্ষণ হচ্ছে চর্মরোগ। আক্রান্তদের মধ্যে কারও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। ভর্তি করার মতো কোনো রোগী এখন পর্যন্ত তাদের কাছে আসেননি।’
এদিকে কিসামত গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কয়েকদিন আগে গ্রামের প্রায় ১১ জন অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজার রহমান বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত একটি গরু জবাই করার ৪ দিন পর গত বৃহস্পতিবার কয়েকজনের শরীরে রোগটির উপসর্গ দেখা দেয়।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি পাশের রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় গরু-ছাগলের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এর প্রভাব এখন সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষত বামনডাঙ্গা, সর্বানন্দ, তারাপুর, বেলকা ও পৌরসভা এলাকায় রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গা, তারাপুর ও পৌরসভায় রোগ প্রতিরোধে টিকা দেওয়া হয়েছে।
অধিদপ্তর জানায়, অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত পশুর পরিচর্যা বা জবাই করে মাংস কাটাকাটি করলে মানুষের মধ্যেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে কারণে আক্রান্ত গরু-ছাগল কোনো অবস্থাতেই জবাই করা যাবে না।
উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সুন্দরগঞ্জের বেশকিছু এলাকায় অ্যানথ্রাক্স রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। পৌরসভায় ২টি গরু মারা গেছে। তাদের কাছে ১৩ হাজার টিকা রয়েছে। আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে। পেলে গরু-ছাগলের মধ্যে টিকা দেওয়া হবে।’