বিদেশ ভ্রমণ আমার কাজ না, এটা আমার অপছন্দ: প্রেস সচিব
বিদেশ ভ্রমণ পছন্দ করেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ শুক্রবার দুপুরে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।
পোস্টে প্রেস সচিব লেখেন, ‘বিদেশ ভ্রমণ আমার অপছন্দ। অধিকাংশ মানুষই বিদেশ ভ্রমণ পছন্দ করে হোক আশেপাশের দেশ কিংবা সমৃদ্ধ পশ্চিম। কিছু কারণে আমার বিদেশ ভ্রমণ ভালো লাগে না। শুধু সেখানকার জীবন কেমন দেখার জন্য আমি কখনো লন্ডন, নিউইয়র্ক, টোকিও, এমনকি বাড়ির কাছের কাঠমান্ডুর মতো শহরগুলো দেখার প্রয়োজন অনুভব করিনি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘২০১২ সালের নভেম্বরে আমি ২৭ দিনের একটি দীর্ঘ ভ্রমণ করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ শহরে। তখন আমি সল্টলেক শহরের মরমন চার্চের বাইরে অদ্ভুত সুন্দর তুষারপাত দেখি। একটি দিন কাটিয়েছি মোমাতে। নিউসিউম ও ওয়াশিংটন পোস্টে অর্ধেক দিন। ব্রডওয়েতে একটি মিউজিক্যাল শো দেখি প্রায় তিন ঘণ্টা। একটি পুরো দিন বাসে ভ্রমণ করে নিউইয়র্ক থেকে নায়াগ্রা জলপ্রপাত যাই। এখানেই আমার বিদেশ ভ্রমণ শেষ হতো কিন্তু তা হয়নি। আমার নতুন চাকরি আমাকে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশে আরও দুইবার নিয়ে গেছে। প্রতিবারই মনে হয়েছে বিদেশ ভ্রমণ আমার কাজ নয়।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীতে কিশোরীসহ ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
শফিকুল আলম লেখেন, ‘আমার আত্মা অন্য কোথাও প্রথিত। আমি লালায়িত প্রাচীন বটগাছ, নদীর ঘাট, ঘুমন্ত গ্রামের মাটির সর্পিল রাস্তা, শান্ত অথচ চকচকে চায়ের দোকান আর বাংলার পথ ধরে দীর্ঘ, লক্ষ্যহীন যাত্রার জন্য। আমার ভেতর প্রাচীন কিছু নাড়া দেয়-বটগাছ বা পুরাতন নদীর ঘাট দেখলেই। সেখানে আমি চুপচাপ বসে থাকতে চাই। কথা বলতে চাই একজন হিন্দু বিধবা বা একজন সুফির সাথে। কথা বলতে চাই মোবাইল ফোন ধরা একটি ছোট ছেলের সাথে অথবা ১৬ বছর বয়সী বিয়ে হওয়া একজন কিশোরী মায়ের সাথে। বাংলার বদ্বীপ এক রহস্যময় ভূমি। যতবার ঢাকার ফ্ল্যাট ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে যাই ততবারই মনে হয় তীর্থযাত্রায় যাচ্ছি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বিদেশের যে জায়গাগুলো দেখতে চাই তা হলো– ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, আসাম ও ত্রিপুরার ছোট শহর। আমি আমাদের লোকদের সাথে দেখা করতে চাই যারা সেখানে বসতি স্থাপন করেছে। তারা কি এখনও একই আছে? তারা কি বট গাছের নিচে চুপ করে বসে থাকে? অথবা নদীর তীরে আমার মতো? তারা কি চায়ের দোকানে লম্বা আড্ডায় দিন কাটায়? কি কথা বলে তারা -বাংলাদেশের কথা বললে? তাদের গ্রামগুলো কি এখনো সবুজ-প্রাচীনকালের মতো? তারা কি মনে করে যে তারা আমারই মতো প্রাচীন বাংলার বদ্বীপের সন্তান? অথবা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কিছু নদীর বংশধর?’
আরও পড়ুন:
নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছে এলডিপি?