গভীর নিম্নচাপে ভারী বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ভূমিধসের পূর্বাভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০
শেয়ার :
গভীর নিম্নচাপে ভারী বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা ভূমিধসের পূর্বাভাস

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হলেও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে গভীর নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের আট বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। সেই বৃষ্টিতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা এবং পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সতর্ক বার্তাও জানানো হয়েছে।

গত বুধবার বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। সেদিন রাতেই লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপ নেয়। এরপর বৃহস্পতিবার এটি রূপ নেয় গভীর নিম্নচাপে। আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, এর প্রভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়- পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিবায়ুর চক্রটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের উড়িষ্যার গোপালপুর এবং পারাদ্বীপের মধ্যে উড়িষ্যা এবং সংলগ্ন অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে

পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।

বুলেটিনে বলা হয়- গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে, যেন স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

এদিকে গভীর নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (২৪ ঘণ্টায় ১৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গতকাল বিকালে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতাজনিত বিশেষ বার্তায় বলা হয়- ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সেই সঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও-কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ফেনী জেলার মুহুরী, সিলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি বেড়ে আশপাশের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।