শিক্ষা সংস্কার কমিশন কেন করা হয়নি, প্রশ্ন জাবি উপাচার্যের

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৫৪
শেয়ার :
শিক্ষা সংস্কার কমিশন কেন করা হয়নি, প্রশ্ন জাবি উপাচার্যের

শিক্ষা সংস্কার কমিশন কেন করা হয়নি, এ বিষয়ে তদারকি প্রয়োজন এবং শিক্ষাখাতে বরাদ্দ পর্যায়ক্রমে কেন কমছে—এমন প্রশ্ন তুলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।

তিনি বলেন, ‘১১টি কমিশন করা হয়েছে। শিক্ষা কমিশন কিন্তু করা হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে একটা তদারকি কমিটি করা হয়েছে, যার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। শিক্ষাখাতে জিডিপিতে এবার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তানের মতো একটি দেশে ৪ শতাংশ জিডিপি দেওয়া আছে। বাংলাদেশের চারপাশে যত দেশ আছে সব দেশেই ৩ এর উপরে। আমাদের দেশে মাত্র ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। সেই দেশে স্বপ্ন কিভাবে, মানুষ স্বপ্নের মতো বড় হবে কিভাবে।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর টাউন হল মিলনায়তনে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে বেকারত্বের বিষয়ে নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। বাংলাদেশে এতোগুলো সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থাকার পরও ৪০ লাখের মত বেকার। তার মধ্যে জিপিএ ৫ পাওয়ায় অধিকাংশ। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয় তাদের অধিকাংশই জিপিএ ৫ পাওয়া।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘পাঠ্যক্রম সংস্কার সারা পৃথিবীতে চলমান একটি প্রক্রিয়া। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করা হয়। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেখেছি উপাচার্য এবং বায়তুল মোকাররমের ইমাম পালিয়ে যায়। স্বাধীনতার এতো বছর পর এতো ব্যর্থতা অভিভাবকদের পক্ষ থেকে আর কি খুঁজে পাই? আইনপ্রণেতারা, উপাচার্যরা পালিয়ে যাচ্ছে। এমন একটি দেশের হাল ধরতে যাচ্ছেন আপনারা—ভুলে যাবেন না। এরকম জীবিকার বহু মানুষই এদেশে ছিল, অনেকেই অভিভাবকের দায়িত্বে ছিল, দায়িত্ব পালন করতে পেরেছে? আমরা দেখেছি বেনজীর-মতিউর মেধার দিক থেকে অতুলনীয় ছিল তারা। আমরা যদি মেধাভিত্তিক একটা সমাজ তৈরি করতে যাই, আমরা যদি মেধার ভিত্তিতে এই জায়গাটিকে বন্ধন করতে যাই, যদি এই ধরনের মানুষদেরকে দায়িত্ব দিতে যাই- তাহলে ছাগলকাণ্ডের মতিউর আর বেনজীরদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে, তার বাহিরে কিছু কি আছে?’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একটি স্বপ্ন দেখতে চাই। আমরা আর রক্ত ঝরাতে চাই না। আমরা এমন একটা সমাজ চাই, যেখানে বেনজীর-মতিউররা জন্মাবে না। যেখানে শুধু জিপিএ-৫ পাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়বে না। নৈতিকভাবে আলোকিত মানুষ দরকার।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মঞ্জুরুর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুন নেছা খন্দকার, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান হাসিব, বাফুফের সহসভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষ এইচএম অলি উল্লাহ প্রমুখ।