শরীয়তপুরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন
শরীয়তপুরে পারিবারিক কলহের জেরে দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া বেগমকে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ ঘরের বারান্দায় মাটি চাপা দেওয়ার দায়ে স্বামী ইলিয়াস শিকদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শরীয়তপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সোলায়মান এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইলিয়াস (৬৩) পলাতক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে ২০০৭ সালের ৩০ নভেম্বর জাজিরা উপজেলার সেনেরচর ইউনিয়নের করিম উদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রী আলেয়া বেগমকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন ইলিয়াস শিকদার। হত্যার পর মরদেহ ঘরের বারান্দার নিচে মাটি চাপা দেন তিনি। পরদিন স্থানীয় গ্রাম পুলিশ হাচেন আলী বিষয়টি টের পেয়ে থানায় খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনার ৩ দিন পর ৩ ডিসেম্বর জাজিরা থানার এসআই নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে ইলিয়াসসহ ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় মোট ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি ইলিয়াছ সিকদারকে ৩০২ ধারায় সন্দোহাতীতভাবে দোষী সাব্যস্ত করে আজ রবিবার তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। একই ঘটনায় স্ত্রীর মরদেহ গুমের অপরাধে ২০১ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ইলিয়াছ সিকদারকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। একই মামলার অপর দুই আসামি রত্না বেগম ও সেকান্দার সিকদার নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকে আসামি ইলিয়াছ সিকদার আসামি পলাতক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান খান দিপু বলেন, ‘স্ত্রী হত্যার দায়ে ইলিয়াসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মরদেহ গুমের অভিযোগে তাকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৪ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে মামলার অপর আসামিরা অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন।’